বাড়ি থেকে মানুষ তুলে নিয়ে যাচ্ছে, খোঁজ মিলছে না : সুলতানা কামাল
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘জনগণের সেবা করার সুযোগ চেয়ে আপনারা হাতজোড় করে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই সৎপথে থেকে সেই দায়িত্ব পালন ও সংবিধান রক্ষা করারও দায়িত্ব আপনাদের।’
‘কথা বললে নাকি বিপদ বাড়ে, কিন্তু কথা না বলে কি কেউ বিপদের বাইরে থাকতে পারছেন?’ এমন প্রশ্ন রেখে সুলতানা কামাল আরো বলেন, ‘চুপ থাকলে দিনে দিনে নাই হয়ে যাবে। দুর্বৃত্তপনা আরো চাঙা হয়ে উঠবে।’
গতকাল সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের স ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে ‘ডিস্ট্রিক্ট লেভেল নেটওয়ার্কিং মিটিং অব হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস’ শীর্ষক বৈঠকে এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘সরকার মানবাধিকারকে সাংবিধানিকভাবে রক্ষা করতে বাধ্য, না পারলে সেটা সরকারেরই ব্যর্থতা।’
এই মানবাধিকারকর্মী আরো বলেন, ‘এখন বাড়ি থেকে মানুষকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কে নিচ্ছে, তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কে করছে এই কাজ, দুর্বৃত্ত নাকি রাষ্ট্র, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’
‘আমাদের আত্মমর্যাদায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে’ মন্তব্য করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা হাতে কিছু পেলেই মনে করছি এটা সরকারের অনুগ্রহ, এটা সত্য নয়। যে জাতি একটি সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো অস্ত্র ছাড়াই খালি হাতে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে সে জাতির আত্মমর্যাদা অনেক বেশি।’
এখন শিশুকে পিটিয়ে মারা হলে, নারীকে বেআব্রু করে নির্যাতন করা হলে তা ভিডিও করে ভাইরাল করা হয় উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘বিদেশিরা আমাদের বলেন, তোমাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে, তারপরও তোমরা অনেক পেছনে পড়ে কেনো।’
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সুলতানা কামাল আরো বলেন, ‘মানবাধিকার শব্দটি শুনলেই অনেকের মধ্যে বৈরী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কারণ তারা নিত্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছেন। মানবাধিকারের সংস্কৃতি নেই, তাই বিচারহীনতার সংস্কৃতিও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন সবাইকে একত্রিত হয়ে মানবাধিকারের কথা বলতে হবে।’
বৈঠকে আরো বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ, অ্যাডভোকেট এস এম হায়দর, উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের, অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল,অ্যাডভোকেট ওসমান গনি, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, মমতাজ আহমেদ বাপী, এম. কামরুজ্জামমান, স্বদেশ পরিচালক মাধব দত্ত প্রমুখ।