বরিশালের দুর্গাসাগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের স্নান উৎসব
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হাজারও পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা গঙ্গাদেবীর চরণে আত্মসমর্পণ করে পূজা, অর্চনা, প্রার্থনার মাধ্যমে পাপ মুক্তির বাসনায় স্নান করেছেন। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
দুর্গাসাগর খননকারী রাজপরিবারের সদস্য দিলীপ কুমার রায় জানান, চৈত্রের অষ্টমী তিথিতে পাপ মোচন করতে প্রতিবছর বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাসাগরে স্নান করতে আসেন। স্নান উৎসব উপলক্ষে দুর্গাসাগর সংলগ্ন মাধবপাশা স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে গ্রামীণ মেলা বসেছে। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে পাপ মুক্তির বাসনায় হাজারও পুণ্যার্থী এই দুর্গাসাগরের স্নান উৎসবে যোগ দেন।
উল্লেখ্য, চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশের চতুর্দশ রাজা শিবনারায়ণের অকালমৃত্যুর সময় তার স্ত্রী রাণী গর্ভবতী ছিলেন। শিবনারায়ণের মৃত্যুর পর তার ছেলে পঞ্চদশ রাজা জয়নারায়ণ জন্মগ্রহণ করেন। বিধবা রাণী দুর্গাবতী বুদ্ধিমতী ও প্রজাবৎসল ছিলেন। আঠারো দশকের শেষভাগে নাটোরের রাণী ভবানী ও চন্দ্রদ্বীপের রাণী দুর্গাবতী জমিদারী পরিচালনা করে বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
তিনি প্রজাদের মঙ্গলের জন্য অনেক পুকুর ও দীঘি খনন করেন। রাণী দুর্গাবতী ১৮৭০ সালে বরিশালের বাবুগঞ্জের মাধবপাশায় এই দুর্গাসাগর খনন করেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার দীঘিটি পূনঃসংস্কার করে। দীঘির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯৫০ ফুট ও প্রস্থ ১ হাজার ৭৫০ ফুট।