ফুরাচ্ছে করোনার টিকা, দ্বিতীয় ডোজের কী হবে
ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের কী হবে- এ নিয়ে সংশয়ে আছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ১৪ লাখ মানুষ। বিকল্প দেশ থেকে সংগ্রহ করতে পারলে তিন মাস অপেক্ষা করে হলেও তাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনই দিতে চাইছে সরকার। না হলে চীন বা রাশিয়ার ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেওয়া হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিক্সড ভ্যাকসিন আরও বেশি কার্যকর হতে পারে। তবে বিষয়টি এখনও গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে।
ফুরিয়ে আসছে দেশে ভ্যাকসিনের মজুদ। এ পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন প্রায় ৫৮ লাখ ২০ হাজার জন। তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিশ্চিত করতে দরকার প্রায় এক কোটি সাড়ে ১৬ লাখ ডোজ। কিন্তু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ। সে হিসাবে নতুন করে টিকা না এলে প্রায় ১৪ লাখ মানুষকে নির্ধারিত সময়ে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে না।
এ অবস্থায় ভারত থেকে না পেলে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে সরকার। দ্বিতীয় ডোজ দিতে আট সপ্তাহের বদলে ১২ সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে। তা না হলে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে চীন, রাশিয়া বা কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. রোবেদ আমীন বলেন, ‘ভয়ের কোনো কারণ নেই। এই ভ্যাকসিনগুলো আট থেকে ১২ সপ্তাহ বা তার পরবর্তী সময়েও নেওয়া যেতে পারে। মিক্সড ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে কি না, একটা ভ্যাকসিন দিয়ে। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ইভাল্যুশন কমিটি আছে, তারা একসঙ্গে বসে সব কাগজপত্র দেখে বৈজ্ঞানিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। … একটা ডকুমেন্ট এসেছে, তাঁরা বলেছেন যে, ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে একই ধরনের ভ্যাকসিন মিক্সড করে দেওয়া যেতে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক মাস দেরি করে হলেও একই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়াই ভালো। তবে দ্বিতীয় ডোজে ভিন্ন কোম্পানির ভ্যাকসিন দিলেও সমস্যার তেমন কিছুই নেই।
এ বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ‘সবারই কাজ হচ্ছে জীবকোষে গিয়ে একটি প্রোটিন তৈরি করা। স্পাইক প্রোটিনের মতো, সেই ভাইরাসের এবং যেটি আমার শরীরে একটি অ্যান্টিবডি তৈরি করবে এবং ইমিউনিটি তৈরি করবে। তার মানে হলো, তারা বিভিন্ন কার্গো দিয়ে পৌঁছাচ্ছে কিন্তু এন্ডে গুডস কিন্তু একই। সুতরাং এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না যে, এগুলো বডিতে ভিন্ন ভিন্ন রিঅ্যাকশন তৈরি করবে। এ ধরনের সম্ভাবনা খুব কম। এমনও হতে পারে এটি আরও ভালো হবে।’
লিয়াকত আলী আরও জানান, এক ডোজ ভ্যাকসিনও করোনার মারাত্মক ক্ষতি থেকে প্রতিরক্ষা দিতে পারে। আর এক কোম্পানির এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে নির্দিষ্ট বিরতির পর অন্য কোম্পানির দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে।