ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে ট্রাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সারা দেশে ফিটনেসবিহীন,নিবন্ধনহীন,চলাচলের অযোগ্য গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং এসব গাড়ি বন্ধে ট্রাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ জন্য প্রতি জেলায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট,বিআরটিএ এবং পুলিশের সমন্বয়ে ট্রাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জনপ্রশাসন সচিব,স্বরাষ্ট্র সচিব ও সড়ক পরিবহন সচিবকে আদালতের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া টাস্কফোর্সের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মইন ফিরোজী ও অ্যাডভোকেট রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিআরটিএ আদালতকে জানায় তাঁরা জনবল সংকটের কারণে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারছেন না। তাঁরা টাস্কফোর্স গঠনের আবেদন করেন। এই জন্য হাইকোর্ট টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন।’ তিনি জানান, এই টাস্কফোর্স সব গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে পারবেন এবং ফিটনেসবিহীন,আনফিট ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি আটক, চালককে গ্রেপ্তার,জরিমানা ও গাড়ি ডাম্পিং করতে পারবেন।
এই আদেশের অগ্রগতির প্রতিবেদন আগামী তিন মাস পর হাইকোর্টকে জানাতে বলেছেন। আগামী ১ জুন এই রুলের পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গতবছরের ২৪ জুন হাইকোর্ট এক আদেশে ঢাকাসহ সারা দেশে নিবন্ধনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি ও লাইসেন্স নিয়ে তা নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য এক মাসের মধ্যে দাখিল করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দেন। ফিটনেস নবায়ন না করা যান ও লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের ক্ষেত্রে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও এ সময়ের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়ে ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুলাই বিএরটিএ একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারা দেশে নিবন্ধনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৩২০।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে দুই লাখ ৬১ হাজার ১১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে এক লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮, রাজশাহী বিভাগে ২৬ হাজার ২৪০, রংপুর বিভাগে ছয় হাজার ৫৬৮, খুলনা বিভাগে ১৫ হাজার ৬৬৮, সিলেট বিভাগে ৪৪ হাজার ৮০৫ এবং বরিশাল বিভাগে পাঁচ হাজার ৩৩৮টি গাড়ি ফিটনেসবিহীন রয়েছে।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে গত ২৩ মার্চ একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। হাইকোর্ট গত ২৭ মার্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে সারা দেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সহীন চালকের তথ্য জানাতে বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল নতুন করে আদেশ দিলেন আদালত।