ফরিদপুরে অর্থপাচার মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ফরিদপুরে বহুল আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি হলেন যুবলীগ নেতা আসিবুর রহমান ফারহান (৩৮)। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরের পূর্ব খাবাসপুর লঞ্চঘাট এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসিবুর রহমান শহর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের আগে দীর্ঘ ১১ বছর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে (রুকসু) কোনো ছাত্র সংসদ ছিল না। কিন্তু ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আরিফুর রহমান ও তাঁর বন্ধু ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাইন কলেজের ছাত্র রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁরা রুকসু ভবনে থেকে ছাত্র রাজনীতি পরিচালনা করতেন। নির্বাচিত সংসদের ভিপি, জিএস না হয়েও তাঁরা সেই ক্ষমতা ব্যবহার করতেন।
ফরিদপুর-৩ আসনের (সদর) সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ফরিদপুর শহরসহ আশেপাশের যেসব জায়গায় সভা-সমাবেশ করতেন, সেখানে আসিবুর ও ফাহাদ জোর করে হোস্টেল থেকে ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে যেতেন স্লোগান ও লোক বেশি করে দেখানোর জন্য। পরবর্তীতে আসিবুর শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পদাক ও ফাহাদ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। শহরে কথিত আছে এই দুইজনের বাবা ও মা জামায়াতে ইসলামীর রোকন ছিলেন।
এই দুই বন্ধুর মধ্যে আসিবুর সাংসদ খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবরের অনুসারী এবং ফাহাদ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাংসদের এপিএস এইচ এম ফোয়াদের অনুসারী।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফরিদপুরে সোনালী ব্যাংকের কাছে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মারা যান ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক নার্স। ওই ঘটনার সঙ্গে আসিবুরের ক্যাডার বাহিনী জড়িত এমন বিষয় প্রমাণিত হওয়ার পর আসিবুর আত্মগোপন করেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, ‘আসিবুরকে ঢাকার কাফরুল থানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আজ রোববার জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে তাঁকে ফরিদপুর থেকে নিজেদের জিম্মায় নেবে সিআইডি ঢাকা।
এই মামলায় আরো দুজন গত শুক্রবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ও জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন (৫৪)।
উল্লেখ্য, সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করে সিআইডি। সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন। এ মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধভাবে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।