প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশের শেষের দিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিলে সরকারের উদ্যোগের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সমাবেশে প্রধান অতিথি খন্দকার মোশাররফের বক্তব্য চলাকালে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
এ বিষয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, ‘পুলিশ অতর্কিতভাবে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’ তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে দুপুরের দিকে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের শেষদিকে হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। ছত্রভঙ্গ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। অন্তত ১৫/২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলার পর সেখান থেকে সরে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
তবে রমনা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ছিল। এ সময় তারা দায়িত্বরত পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিপেটা করে। এ সময় ওই স্থান থেকে কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে। কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে আজ সকাল ১০টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হলেও সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন।
এক পর্যায়ে যুবদলের একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এদিকে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে, বিএনপির সমাবেশের কারণে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চাইলে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি, উত্তেজনা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ অবস্থা চলে প্রায় ১০ মিনিট।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, যুবদল মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।