প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনা চেয়েছেন সাংবাদিক নেতারা
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও সংবাদকর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রণোদনা চেয়েছেন (বিএফইউজে) বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতারা।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা। মতবিনিময় শেষে এ আবেদনপত্র হস্তান্তর করেন সাংবাদিক নেতারা।
চিঠি হস্তান্তর শেষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, সবাই ছুটিতে আছে। সেই সময়েও সাংবাদিকরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এই দুর্যোগের সময়ে কাজ করার জন্য সাংবাদিকদের প্রণোদনা দিতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি। সেই আবেদন আমরা তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কাছে দিয়েছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকেও চিঠির বিষয়ে অবগত করেছি।’
এ সময় তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী লিখিতভাবে সেদেশের মান্যবর প্রধানমন্ত্রীকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের নানা উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সরকারের সাথে একযোগে কাজের কথা জানিয়েছেন, কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপি সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
‘বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য এ সংকট মোকাবিলায় তাদের হাত প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে নয়’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী এই দুর্যোগের মুহূর্তে ভুল না থাকলেও সরকারের ভুল খোঁজার চেষ্টা করাই তাদের উদ্দেশ্য। তাদের দলের পক্ষ থেকে রিজভী সাহেবসহ অনেকেই কদিন আগেও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বক্তব্য রেখেছেন।’
‘আমরা বারংবার বলেছি, বিএনপি আমাদের সাথে থেকে কাজ করতে পারে, কোনো বাধা নেই, আমরা স্বাগত জানাব, তাদের যদি কোনো পরামর্শ থাকে, তারা দিতে পারে’, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু বিএনপি এ পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে না থেকে সরাকারের ভুল খোঁজার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো ভালো থাকলেও সরকার স্বস্তির ঢেঁকুর তুলছে না, বরং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ এই মহাদুর্যোগের সময় যখন সারা পৃথিবী থমকে গেছে, তখন সরকার অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে ধৈর্যের সাথে পর্যায়ক্রমে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশে পরিস্থিতি অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে। তার মানে এই নয় যে, সরকার স্বস্তির ঢেঁকুর তুলছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সারা দেশে প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি বিত্তবানরাও এগিয়ে আসছেন এবং সাংবাদিকরা সেগুলো গণমাধ্যমে তুলে আনছেন। সবাই সাড়া দিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিক নেতাদের পত্রটি গ্রহণ করেন। বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশও মুক্ত থাকেনি, এর মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে সাংবাদিকরা কাজ করায় তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করতে এবং কেউ যাতে জনমনে গুজব-বিভ্রান্তি-আতঙ্ক ছড়াতে না পারে সেজন্য গণমাধ্যম ও সরকার আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।