প্রক্টরের মদদে হামলার ফুটেজ গায়েব : রাশেদ
ডাকসু ভবন ও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টরের মদদে হামলার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করলেই বেরিয়ে আসবে সনজিত ও সাদ্দামই মূল আসামি।’
আজ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাশেদ খান। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের হামলায় আহত আটজনের শারীরিক অবস্থা জানাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
রাশেদ বলেন, ‘আমাদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল সে নির্যাতনের তথ্যপ্রমাণ রয়েছে ভিডিও ফুটেজে। সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করলেই বেরিয়ে আসবে সনজিত ও সাদ্দামই মূল আসামি। তাদের নেতৃত্বেই আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’ সনজিত চন্দ্র দাস হলেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং সাদ্দাম হোসেইন হলেন ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।
রাশেদ খান বলেন, ‘ঢাবি প্রশাসন বলেছে তারা সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা কামনা করেছে। এই সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানীর মদদে এবং তার হস্তক্ষেপে। আমাদের ওপর প্রথম দফায় হামলা করেছিল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এরপর আমি তাঁকে ১০ বার কল দেই। এরমধ্যে তিনবার তিনি আমার কল রিসিভ করেন। এই তিনবার তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একটা পর্যায়ে তিনি বলেছেন, “তুমি ডাকসুর কেউ না, তুমি কেন সেখানে গিয়েছ?” আমি তাকে বলেছি আমি ঢাবির শিক্ষার্থী। ঢাবির যেকোনো জায়গায় যাওয়ার অধিকার আমার আছে। তিনি তারপরও আমাকে গালিগালাজ করেন। আকুতি করার পরও তিনি আসেননি, প্রক্টরিয়াল টিম পাঠাননি। যখন দ্বিতীয় দফায় হামলা করা হয় তখন তিনি আসেন। অর্থাৎ তিনি ইচ্ছেকৃতভাবেই আমাদের রুমের মধ্যে মার খাইয়েছেন। তিনি যদি প্রথম দফা হামলার পর আমাদের উদ্ধার করতেন তাহলে এভাবে নির্মম নির্যাতনের শিকার হওয়া লাগত না।’
রাশেদ আরো বলেন, ‘হামলার সঙ্গে প্রক্টর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দালাল, দলকানা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি।’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ভিপি নুরের ওপর মোট ১০ বার হামলা করা হলো।’
হামলায় আহতদের প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, ‘আহতরা কেউই এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। সোহেলের মাথায় অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউতে, তুহিন ফারাবির অবস্থা আবার অবনতি হওয়ায় তাকেও আইসিইউর পাশে এইচডিইউ ইউনিটে রাখা হয়েছে।’
রাশেদ আরো বলেন, ‘আহত অন্যদের কেবিনে রাখা হয়েছে। এখনো ভিপি নুরের আঙুলে ব্যান্ডেজ। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা আছে। ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না সে। এ ছাড়া বাকি সবার অবস্থাও একই রকম। জাহাঙ্গীর কবির নানক ও বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছিলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। তবে মূল আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দামকে আটক না করে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’
সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক আহত মশিউর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের সনজিত ও সাদ্দামের নির্দেশে আমাদের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় লাইট বন্ধ করে হামলা করা হয়েছে। হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর জড়িত। আর ছাত্রলীগের যারা হামলা করছে তারা ভিপি নুরকে নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে। আমরা গতকাল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। দাবি করি, সেটি মামলা আকারে নেওয়া হবে।’