‘নবাব সলিমুল্লাহর নাতি’ কারাগারে
প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় নবাব সলিমুল্লাহর কথিত নাতি ‘প্রতারক’ আলী হাসান আসকারীকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার এই আদেশ দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
জিআরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আজ মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগের দিন অর্থাৎ বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আলী হাসান আসকারীসহ তাঁর প্রতারকচক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— নবাবের নাতি পরিচয়দানকারী আলী হাসান আসকারী (৪৮), মো. রাশেদ ওরফে রহমত আলী ওরফে রাজা (৩৪), মীর রাকিব আফসার (২০), মো. সজীব ওরফে মীর রুবেল (৩৩), মো. আহম্মদ আলী (৩৮) ও মো. বরকত আলী ওরফে রানা (৩২)।
তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত নবাব পরিবারের অ্যামবুশ সিল, ওয়াকিটকি সেট, বেতারযন্ত্র, ভিওআইপি সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, একাধিক মোবাইল, সিমকার্ড, মেডিকেল রিপোর্ট, পাসপোর্টের কপি ও বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানির লিফলেট উদ্ধার করা হয় বলে সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, মোহাম্মদপুর থানায় গত ২৪ অক্টোবর বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা হয়। প্রতারণার শিকার ও মামলার বাদী ফেনীর স্কুলশিক্ষক আবদুল আহাদ সালমান। এই মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন হাফিজুর রহমান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ৫০০ লোক নিয়োগ দেওয়া হবে- এমনটা জানিয়ে মামলার বাদীকে বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোক সংগ্রহ করতে বলেন আলী হাসান আসকারী। তাঁর কথায় বিশ্বাস করে বাদী বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোকের কাছ থেকে তিন কোটি ৩৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাঁকে দেন। টাকা পেয়ে কাউকে বিদেশে না পাঠিয়ে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা ১০ কোটি টাকার বেশি প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক চক্রের প্রধান আলী হাসান আসকারী নিজেকে নবাব সলিমুল্লাহ খানের নাতি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলতেন, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে নাকি তার ভালো সম্পর্ক। অথচ এসবই ছিল ভুয়া, প্রতারণার অংশ। তার ফেসবুকে নানা ধরনের ছবি দিয়ে প্রতারণার কাজে সেগুলো ব্যবহার করতেন। এর অংশ হিসেবে ফেসবুক প্রোফাইলে মন্ত্রী, এমপিসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলতেন।