নদীতে চামড়া ফেলে বিপাকে রাজশাহীর মৌসুমি ব্যবসায়ী
রাজশাহীতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা খুব সতর্কভাবেই চামড়া কিনেছেন। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাজার না বুঝে বেশি দামে চামড়া কেনেন। পরে তারা কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। গুনেছেন লোকসানও।
এদিকে, বিক্রি করতে না পেরে ঈদের পরের দিন রাজশাহীতে সাখাওয়াত হোসেন নামের এক মৌসুমি ব্যবসায়ী নগরীর বুলনপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে একভ্যান ছাগলের চামড়া ফেলে দেন। সেই ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এখন তিনি পড়েছেন বিপাকে।
পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল বুধবার ঘটনাস্থলের পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়ার ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
গত রোববার সকালেই নদীতে চামড়া ফেলে দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে। সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমেও। বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিষয়টি তদন্তের জন্য রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি টিমকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টির সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরিফুল হক বলেন, ‘যিনি চামড়া নদীতে ফেলেছেন তিনি রাজশাহীর একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী। চামড়া কেনাবেচা কিংবা সংরক্ষণে তাঁর অভিজ্ঞতা নেই। তিনি ছাগলের চামড়া কেনার পর নাটোর ও রাজশাহীতে বিক্রির চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্রি বা সংরক্ষণ করতেও জানেন না। তাই চামড়ায় পচন ধরে। এ কারণে তিনি নদীতে ফেলে দেন।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘ আমার কাছে মনে হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চামড়া নদীতে ফেলা হয়েছে। সে কারণে ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সাখাওয়াত হোসেন চামড়া বিক্রি করতে না পারলে আমাদের জানাতে পারতেন অথবা মাটিতে পুঁতে ফেলতে পারতেন। তিনি নদীতে চামড়া ফেলে পরিবেশের দূষণ করেছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপপরিচালক মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ আইন অনুযায়ী কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে দূষণ আসলেই হয়েছে কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। সেজন্য নদীর যে স্থানে চামড়া ফেলা হয়েছে সেখান থেকে তিন বোতল পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই পানি পরীক্ষার জন্য গতকাল বুধবার বগুড়ার ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।’
নদীর স্রোতে চামড়া ফেলার দুই দিন পর সেখানকার পানিতে দূষণের মাত্রা বোঝা যাবে কি না, জানতে চাইলে মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘সেটা পরীক্ষার পরই বলা যাবে। এটা আমাদের প্রক্রিয়া। আমরা আইন অনুযায়ী পানি পরীক্ষা করছি। পানি পরীক্ষার পর যে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’