নওগাঁয় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাবুল হোসেন নামের এক অসহায় কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের মহামারিতে যখন কৃষক বাবুল হোসেন শ্রমিকের অভাবে জমির ধান কাটতে পারছিলেন না তখন খবর পেয়ে রাইগাঁ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ওই কৃষকের দুই বিঘা জমির ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে মহাদেবপুর উপজেলার সহরাই পশ্চিম পাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে কাস্তে হাতে নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জমিতে নেমে ধান কাটছেন। পরে ওই ধানগুলো কৃষক বাবুলের বাড়িতে এনে মাড়াই করে দিয়েছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা ওই কৃষকের জমির সব ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহাদেবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, একাডেমিক সুপারভাইজার ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
অসহায় কৃষক বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমি গরিব ও বয়স্ক মানুষ। করোনাভাইরাসের কারণে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও তাদের মজুরি অনেক বেশি। তাই আমার পক্ষে এতো বেশি মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিয়ে ধান কাটা সম্ভব নয়। আমার এমন অবস্থার কথা জানতে পেরে রাইগাঁ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসে জমির ধান কেটে আমার ঘরে তুলে দিয়েছেন। এতে আমি অনেক খুশি। আমি তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করছি।’
অধ্যক্ষ আরিফুর রহমান জানান, শুধু কৃষকের ধান কাটাই নয়, এমন জনহিতকর কাজ তিনি অনেক আগে থেকেই করে আসছেন। তিনি নিজ উদ্যোগে মুজিব শতবর্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং রাস্তার দুইপাশ দিয়ে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ফলদ ও বনজ গাছের চারা রোপন করেছেন। এ ছাড়া এলাকায় সবুজায়নের জন্য বিভিন্ন জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিবসেও দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গাছের চারা রোপন করে আসছেন। এসব কাজের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক তাঁর কলেজের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে মাঠে গিয়ে অসহায় কৃষকের ধান কাটার কার্যক্রম শুরু করেছেন। যতদিন মাঠে ধান আছে ততদিন তাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেখানে খবর পাবেন, সেখানে গিয়ে তাঁরা স্বেচ্ছায় ওই কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়ে আসবেন।