ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর স্টেশনে দুটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর ফলে তেলবাহী একটি ট্রেনের ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর পর থেকেই খুলনার সঙ্গে সারা দেশের সব ধরনের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কোটচাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জানান, দর্শনা থেকে খুলনাগামী ভারতীয় পাথরবোঝাই (মালবাহী) ট্রেনটি কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর স্টেশনে অপেক্ষায় ছিল। এ সময় যশোরের নওয়াপাড়া থেকে পার্বতীপুরগামী তেলবোঝাই অপর একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তেলবোঝাই ট্রেনের পাঁচটি ট্যাঙ্কার লাইনচ্যুত হয় এবং তিনটি ফেটে তেল বের হতে থাকে। খবর পেয়ে দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এর পর থেকে এলাকার সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ধূমপান এবং আশপাশের বাড়িঘরে আগুন জ্বালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিং করা হচ্ছে।

আবদুর রাজ্জাক আরো জানান, রেললাইনের পাশের বিভিন্ন গর্ত তেলে ভর্তি হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ ছড়িয়ে পড়া তেল লুটে নিচ্ছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ না করা হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, পাথরবোঝাই ও ডিজেল তেলবোঝাই ট্রেন দুটি সিগন্যাল অমান্য করে একই লাইনে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিকট শব্দে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়।

মোস্তফা আরো জানান, এ সংঘর্ষে ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। বগি লাইন থেকে পড়ে যাওয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ ডিজেল তেল এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এরই মধ্যে ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। সকাল ৮টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে। চালকের অসতর্কতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন মাস্টার।

অন্যদিকে ঈশ্বরদী রেলওয়ে কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে পদস্থ কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে রেলের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা আবদুস সোবাহানকে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ দ্রুত চালু করার জন্য কাজ চলছে।