তালিকাভুক্ত রাজাকারদের বিচার করা যাবে, যদি...
যদি তালিকাভুক্ত কোনো রাজাকারের অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে অবশ্যই তার বিচার করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ রোববার দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার প্রাথমিক খসড়াও প্রকাশ করা হয়।
এরপর বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘তদন্তে প্রমাণিত হলে তালিকাভুক্ত রাজাকারদের নিশ্চয়ই বিচার হবে। আমি এখনও এই তালিকা হাতে পাইনি। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে দেখবে কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, কাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। তারা যদি তদন্ত করে অপরাধ সংঘটনের প্রমাণাদি পায়, নিশ্চই তালিকাভুক্ত রাজাকারদের বিচার হবে।’
তবে রাজাকারের তালিকা প্রকাশের সময়ও এই প্রশ্নটি সামনে এনেছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তখন মুক্তিযোদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এটা সামাজিক সচেতনতা ও জনগণকে অবহিত করার জন্য। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ এখন নেই। যদি সেটা করতে হয়, তাহলে তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে, মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে এবং পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী উপেন্দ্র যাদবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত বানসিদ্র মিশ্রি এবং বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন পর রাজাকারের প্রথম তালিকা প্রকাশ করা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিহাসে সবকিছু পরিষ্কার হওয়াই ভালো। নতুন প্রজন্ম এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সবার সত্য ইতিহাস জানা উচিত। আমাদের এমন একটা সময় গেছে, যখন আমরা কীভাবে স্বাধীন হয়েছি, কে আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, কে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছেন সে কথাও বলতে দ্বিধাবোধ করা হয়েছে।’
একটা সময় এবং পরিবেশ গেছে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথাও বলতে দ্বিধাবোধ করা হয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘এই অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।’ তিনি আরো বলেন, এইসব রাজাকারের তালিকা এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাসগুলো নতুন প্রজন্মকে একটা সুন্দর, শক্তিশালী এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।’
বৈঠকে আইন ও বিচার অঙ্গনে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ আরো মসৃণ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেন নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশের বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নেপালি বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারেও আশ্বাস দেন আইনমন্ত্রী।