ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আট দিনে বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির প্রায় এক লাখ পাঁচ হাজার সিমধারী ঢাকার বাইরে গেছেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফিরে এসেছেন মাত্র আট লাখের কিছু বেশি সিমধারী। এর মানে, বিপুল সিমধারী ঢাকায় ফিরেননি।

আজ শুক্রবার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে বলেছেন, ‘একটু আগে ঢাকা থেকে যাওয়া ও আসা সিমের হিসাব পেলাম। অবিশ্বাস্য নয় যে, ২২ জুলাই অবধি ১ কোটি ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮৩টি সিম ঢাকার বাইরে গেছে। অন্যদিকে ঈদের পরদিন ঢাকা ফিরেছে মাত্র ৮ লাখ ২০ হাজার ৫১৬টি সিম।’

‘আজকে থেকে শুরু হওয়া লকডাউন ও তার পরে কী হবে সেটি দেখার বিষয়। করোনায় এর কী প্রভাব পড়বে সেটাও দেখার বিষয়’, যোগ করেন মন্ত্রী।

আজ রাতে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকার বাইরে যাওয়া মোবাইল সিমগুলোর মধ্যে ৪৯ লাখ ৫৬ হাজার ৪০৪টি গ্রামীণফোনের, ২৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৭টি রবির, ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭৮টি বাংলালিংকের এবং চার লাখ ৩০ হাজার ৬১৪টি সিম ছিলো টেলিটকের।

অপরদিকে ঢাকায় এসেছে গ্রামীণফোনের দুই লাখ ২৪ হাজার ৭০৯টি, রবির তিন লাখ আট হাজার ৪৯১টি, বাংলালিংকের দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৫২টি এবং টেলিটকের ৩৯ হাজার ১৬৪টি সিম।

এর আগে ঈদের দিন অর্থাৎ বুধবার রাতে মোস্তাফা জব্বার ছয় দিনের হিসাব দিয়ে জানিয়েছিলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১৫ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ছয় দিনে প্রায় ৮৩ লাখ সিম রাজধানীর বাইরে গেছে।

যদিও মন্ত্রী এদিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘মনে রাখবেন এটি কিন্তু মানুষের হিসাব নয়। একজনের ১৫টা অবধি সিম থাকতে পারে। আবার একটি সিমের সঙ্গে বহুজন ঢাকা ছেড়ে যেতে পারেন।’

চারটি অপারেটর—গ্রামীণ ফোন লিমিটেড, রবি অ্যাজিয়াটা লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিমের ওপর ভিত্তি করে এই পরিসংখ্যানটি তৈরি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের সংযোগ সংখ্যা আট কোটি ৭৫ লাখ, রবির পাঁচ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার, বাংলালিংকের তিন কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার এবং টেলিটকের ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার।

মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএর হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশকে ‘ইউনিক ইউজার’হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই অনুযায়ী, দেশে প্রকৃত মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা নয় কোটির কিছু বেশি।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার ৫০ থেকে ৫৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এর প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি। আজ থেকে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। এ সময়ে কল-কারখানা, বেসরকারি অফিস ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ফলে বিপুল সংখ্যাক মানুষই ঢাকায় ফিরতে পারেননি বা পারবেন না।