ড. ইউনূসকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি
গ্রামীণ টেলিকমের ৩৮ জন কর্মীর চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ বাস্তবায়ন না করার ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলায় শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত অবমাননার রুলের শুনানির জন্য আগামী ২২ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এর আগে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আশরাফুল হাসান।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেছি। গ্রামীণ টেলিকমের ৩৮ জন বেতন পাচ্ছেন।’
তখন রিটকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘এটা সত্য নয়।’
পরে আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আশরাফুল হাসানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। একইসঙ্গে শুনানির জন্য ২২ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসানকে তলব করেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আদালতে তাঁদের ভার্চুয়ালি হাজির হতে বলা হয়। একইসঙ্গে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত।
আদালত আদেশে বলেন, ‘গত ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পিটিশনারদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিসেবে ওই আদেশ অনুসরণ করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রাথমিক সত্যতা পরিলক্ষিত হওয়ায় রুল জারি হয়েছে।’
শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামারুজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়েছে। এরপর সেই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আদালত ৩৮ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ সত্ত্বেও কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তাঁদের ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দেন।’