টিকেট কেটে আহসান মঞ্জিল ঘুরে দেখলেন তাপস
নির্বাচনী ব্যস্ততার মাঝেও পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘আহসান মঞ্জিল’-এ বেশ কিছুটা সময় একাকী কাটিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ দুপুর ১টার দিকে ঢাকার নবাবদের এই বাসস্থানে প্রবেশ করেন ব্যারিস্টার তাপস। আহসান মঞ্জিলের সবকিছু ঘুরে দেখা, দুটি মিডিয়াকে সময় দেওয়া, আগত পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলা আর ছোট ছোট সোনামণিদের সঙ্গে খুনসুঁটি করে বিকেল ৩টার দিকে বেরিয়ে যান ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য।
পরিচিত ভিড়, নিরাপত্তার ঘেরাটোপ আর গণমাধ্যমের উৎসুক ক্যামেরার চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিবারের সদস্য বা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ছাড়াই তাপস প্রায় দুই ঘণ্টা সময় কাটানোর ফাঁকে ফাঁকে খোঁজ-খবর নেন আহসান মঞ্জিলের, সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কথা বলেন সেখানকার কর্মকর্তা আর কর্মীদের সঙ্গেও।
বুড়িগঙ্গার তীরে ইসলামপুরের ঊনবিংশ শতাব্দীর স্থাপনা ‘আহসান মঞ্জিল’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যেই পড়েছে। আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থীর সেখানে অবস্থানকালে সঙ্গী হয়েছিল এনটিভি অনলাইনও। এ সময় তিনি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে সাক্ষাতকারও দেন। সেখানে তিনি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও নন্দনতাত্ত্বিক স্থাপনাগেুলো নিয়ে পর্যটনকেন্দ্রিক নিজের ব্যক্তিগত পরিকল্পনাগুলোর কথা তুলে ধরেছেন। (পুরো সাক্ষাতকারটি পড়তে এনটিভি অনলাইনে চোখ রাখুন)।
আজ সোমবার অন্যান্য দিনের মতোই সকাল থেকেই খোলা ছিল আহসান মঞ্জিল। দর্শকরা ভিতরে নানা দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন। দুপুর ১টার দিকে একান্ত ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে পুরান ঢাকার কুমারটুলি এলাকার আহসান মঞ্জিলে আসেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আহসান মঞ্জিলে প্রবেশ করতে হলে দর্শনার্থীদের টিকেট কাটতে হয়। গেইটে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা তাপসকে চিনতে পেরে এমনিতেই প্রবেশ করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তাপস তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীকে টিকেট কেটে নিয়ে আসার জন্য পাঠান। এই সময়ের মধ্যে উৎসুক দর্শনার্থীদের কয়েকজনও গেইটের কাছে চলে আসেন। ব্যক্তিগত সহকারী নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে নিয়ে এলে তাপস সেই টিকেট দেখিয়ে অন্যান্য দর্শনার্থীর মতোই আহসান মঞ্জিলে প্রবেশ করেন।
গেইট দিয়ে প্রবেশ করে এগিয়ে যাওয়ার সময় বাবার কোলে থাকা একটি শিশু তাঁকে দেখে হাত বাড়ালে তিনি এগিয়ে গিয়ে শিশুটিকে আদর করেন। শিশুটির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এরই ফাঁকে আরো অনেক দর্শনার্থী সেখানে ভিড় করেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন তরুণ। তাপস তাদের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কোনো নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করেই বঙ্গবন্ধু পরিবারের এই সদস্য সবার সঙ্গে মিশে যান। আর সবাই তাঁর সঙ্গে সেলফি, ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে অনেককে ডেকে নিয়ে আহসান মঞ্জিলের বারান্দায় বসে ছবি তুলেন।
ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসকে এভাবে পেয়ে অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। আপ্লুত আফরোজা নামে এক দর্শনার্থী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সত্যিই আমি মুগ্ধ্। আমরা এমন রাজনীতিবিদই চাই, যিনি সহজে মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেন।’
দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তাপস চলে যান আহসান মঞ্জিলের দোতলায়। সেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনী দেখেন। এ সময় জাতীয় জাদুঘরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে আহসান মঞ্জিলের সমস্যার ব্যাপারে জানতে চান তিনি। পরে দুটো মিডিয়াকে সময় তাপস। বিকেল ৩টার দিকে তিনি আহসান মঞ্জিল থেকে বেরিয়ে যান।
আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পাবেন। পরদিন ১০ জানুয়ারি প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করবে ইসি। তারপরই শুরু হয়ে যাবে ভোটযুদ্ধ।
ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর এবার দ্বিতীয়বারের মতো ভোট হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের ভোটে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে মেয়র হন সাঈদ খোকন। এবার এই সিটিতে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যারিস্টার তাপস। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির কনিষ্ঠপুত্র তাপস এর আগে তিনবার ঢাকা-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এই সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের সঙ্গে।