ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যার ১৬তম বার্ষিকী আজ
ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যার ১৬তম বার্ষিকী আজ রোববার। জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০০৫ সালের এই দিনে ঝালকাঠির দুই বিচারক নিহত হন। সেদিন সকাল ৯টার দিকে সরকারি বাসভবন থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসে এই নৃশংস হামলা চালানো হয়।
জানা যায়, ওই হামলায় ঘটনাস্থলে মারা যান বিচারক জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ শহীদ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃতু হয় বিচারক জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ের। ওই সময় তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি বিধ্বস্ত হয়। আহত অবস্থায় ধরা পড়ে হামলাকারী জেএমবি সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন। সারা দেশের মানুষ এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান। এরপর জেএমবির শীর্ষ নেতারা আটক হয়। জঙ্গিদের ঝালকাঠিতে নিয়ে তাদের উপস্থিতিতে জেলা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকাজ চলে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমেদ ২০০৬ সালের ২৯ মে সাত জনের ফাঁসির আদেশ দেন। উচ্চ আদালতে সে রায় বহালের পর দেশের বিভিন্ন জেলখানায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।
ওই ছয় জঙ্গি হলো—জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সামরিক শাখা প্রধান আতাউর রহমান সানি, উত্তরাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল, দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী খালেদ সাইফুল্লাহ ও বোমা হামলাকারী ইফতেখার হাসান আল মামুন। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর জঙ্গি আসাদুল ইসলাম আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হয় খুলনা কারাগারে।
এদিকে, বিচারক হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আজ রোববার নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকেরা। সকালে আদালত চত্বর থেকে একটি শোকযাত্রা বের হয়ে নিহত বিচারকদের স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে নিহতদের স্মরণে জেলা ও দায়রা জজ, জেলা প্রশাসন ও জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। বিচারকের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ তুলে দেন আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. এ কে এম এমদাদুল হক, জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী এবং জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ। এ সময় নিহতের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে আদালতের শহীদ সোহেল-জগন্নাথ মিলনায়তনে স্মরণসভা, দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।