জড়িত দুইজনকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে : চবি উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ। জড়িত দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অন্যরা বহিরাগত। বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা জড়িত তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিতে রাজি নই আমরা।
আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ৩৪তম সিনেট অধিবেশনে সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খানের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আরও লাইটিং এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপাচার্য শিরীণ আখতার আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে এটি খুবই লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত এ ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন৷ তিনি বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়েছেন ৷
সিনেট সভার বক্তব্যে যৌন নিপীড়নের এ ঘটনায় শিক্ষকদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হওয়ার উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে দুজন ছাত্রলীগকর্মী। বাকি দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এদিকে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী মো. আজিমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় ছয়জন সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
শনিবার র্যাব-৭ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ। গ্রেপ্তাররা হলেন- চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিম (২৩) ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আবছার বাবু (২২) এবং হাটহাজারী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নুর হোসেন শাওন (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা মাসুদ (২২)। এ ঘটনায় আরও দুজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান চালাচ্ছে। আটকরা সবাই ছাত্রলীগকর্মী বলে জানা গেছে।
এর আগে রোববার (১৭ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল সংলগ্ন এলাকায় ৫ জন দুর্বৃত্তের হাতে শারীরিক হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা বন্ধুকেও মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া জড়িত পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলাও করেছেন ওই শিক্ষার্থী।
এদিকে যৌন নিপীড়নের এ ঘটনার জেরে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দেয়। ছাত্রী হেনস্তা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোট মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।