গৃহবধূকে ‘গলাকেটে হত্যার পর আত্মহত্যা চেষ্টা’, ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় লিপি আক্তার (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামীর চাচাতো ভাই রাসেল মিয়ার নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা সদরের পূর্বধলা পশ্চিমপাড়া গ্রামে গত রোববার এ ঘটনার পর গতকাল সোমবার বিকেলে লিপি আক্তারের বড় বোন ফেরদৌসি বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাওহীদুর রহমান এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
নিহত লিপি পূর্বধলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের স্ত্রী। আহত রাসেল একই বাড়ির আলাল উদ্দিনের ছেলে ও লিপির স্বামীর চাচাতো ভাই। লিপি আক্তারের সঙ্গে রাসেলের পরকীয়া ছিল বলে জানিয়েছেন লিপির শ্বশুর জালাল উদ্দিন।
ঘটনার দিন লিপি আক্তারের পাশে আসামি রাসেলকেও গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, লিপি আক্তারকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা চালান রাসেল। বর্তমানে রাসেল পুলিশ প্রহরায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লিপির স্বামী আজিজুল বিজিবিতে কর্মরত। তাঁদের আলিফ নামের ১২ বছরের এক ছেলে রয়েছে। লিপি তাঁর ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। ঘটনার দিন রাতে লিপি তাঁর ছেলেকে নিয়ে নিজ ঘরের এক পাশে ও লিপির আপন দেবর সিরাজুল ইসলাম তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে অন্য পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন।
সিরাজুলের বরাত দিয়ে ওসি তাওহীদুর রহমান জানান, দিবাগত রাত ৩টার দিকে হঠাৎ ঘরে গোঙানির শব্দ শুনে সিরাজুল ও তাঁর স্ত্রী জেগে দেখেন গলা কাটা অবস্থায় লিপি ও রাসেল ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। তখন তাঁদের চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে আহত দুজনকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক লিপি আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত রাসেলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
লিপির শ্বশুর জালাল উদ্দিন জানান, তাঁর ছেলে আজিজুল প্রায় ১৫ বছর আগে বিজিবিতে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর উপজেলার জারিয়া গ্রামে বিয়ে করেন। তাঁদের দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও তিন থেকে চার বছর ধরে লিপির সঙ্গে রাসেলের পরকীয়ার কথা জানাজানি হয়। এক সপ্তাহ আগে তাঁর ছেলে আজিজুল ছুটিতে বাড়িতে এসে এ নিয়ে পারিবারিকভাবে দেনদরবার করে কর্মস্থলে ফিরে যান। কী কারণে ও কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।
ওসি তাওহীদুর রহমান জানান, পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন রাসেল। এ ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।