গণসমাবেশে যাওয়ায় বিএনপির ৩ নেতার দোকানে তালা

বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দেওয়ায় তিন নেতার দোকানে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
দোকান খুললে হামলা ও ভাঙচুরের হুমকি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা এমন অভিযোগও করছেন বিএনপির নেতারা। তাই সমাবেশ শেষ হওয়ার দুদিন পরও নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে ভয় পাচ্ছেন এই তিন নেতা। এ ব্যাপারে তাঁরা পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বিএনপিনেতাদের অভিযোগে জানা যায়, নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়ন থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা গত ৫ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ যোগ দেয়। গত শুক্রবার নিজের ওষুধের দোকান বন্ধ করে গণসমাবেশে যান মোল্লারহাট ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খলিল সরদার, রড সিমেন্টের দোকানি মোল্লারহাট ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খোকন খন্দকার এবং একটি পাইকারি মালামাল বিক্রির দোকানি রানাপাশা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব উজ্জ্বল হাওলাদার।
এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় মোল্লারহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার নেতৃত্বে একদল যুবক মিছিল নিয়ে এসে তাদের তিনটি দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। শনিবার সমাবেশ থেকে ফিরে সন্ধ্যায় দোকান খুলতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মীরা তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। দোকান খুললে ভাঙচুর ও মারধর করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগনেতা সোহেল রানা। এরপর থেকে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের এই তিন নেতা তাদের দোকান খুলতে পারছেন না।
মোল্লারহাট ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খলিল সরদার বলেন, দোকানের পাশেই আমার বাড়ি। শুক্রবার দোকান বন্ধ করে বিভাগীয় গণসমাবেশে যাই। শনিবার সন্ধ্যায় এসে দেখি দোকানে অন্য একটি তালা লাগানো। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার নেতৃত্বে আমার দোকানে তালা লাগানো হয়েছে। দোকান খুললে ভাঙচুর ও মারধর করা হবে।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি খোকন খন্দকার বলেন, আমার দোকানে দুটি তালা লাগিয়েছে সোহেল রানা। আমি এখন বাসা থেকেও বের হতে পারছি না। তাদের ভয়ে আমার দোকান খুলতে যেতেও পারি না। দোকান খুললে ভাঙচুর করার হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি পুলিশকেও জানাতে পারছি না, তাহলে আবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেশি ক্ষিপ্ত হবে। এ অবস্থায় আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। ব্যবসা না করতে পারলে সংসার চলবে কীভাবে।
এ ব্যাপারে মোল্লারহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, আমার নেতৃত্বে কোনো দোকানে তালা লাগানো হয়নি। রাজনীতি করলে অনেক মিথ্যাচারের শিকার হতে হয়। কারা তালা মেরেছে আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, মোল্লারহাট ইউনিয়নে কারও দোকানে তালা মেরেছে—এমন ঘটনা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।