খুলনায় ২১ ও ২২ অক্টোবর বাস চলাচল বন্ধ : পরস্পরবিরোধী বক্তব্য
আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনার সঙ্গে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে খুলনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি ও খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব।
আজ বুধবার দুপুরে সংগঠনের সভাপতি কামাল হোসেন জানান, তিনি কোনো মিটিং হয়েছে বলে জানেন না। ধর্মঘটের বিষয়েও কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে আজ দুপুরে খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস মালিক সমিতির প্রধান সময় নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক মহাসড়কে অবৈধভাবে নসিমন, করিমন, মহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসির গাড়ি চলাচলে করছে। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন কর্তৃক অবৈধ নসিমন, করিমন, মহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসি বাসের যত্রতত্র কাউন্টার বন্ধ না করলে আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ আব্দুল গাফফার বিশ্বাস জানান, ধর্মঘট নিয়ে কোনো মিটিং হয়নি, যা হয়েছে দলীয় সিদ্ধান্ত। ধর্মঘট ঘোষণা করেছে তাও তিনি শোনেননি।
খুলনা বিভাগীয় মিনিবাস বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকায় রয়েছেন বলে জানান।
আর মোটর বাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি কামাল হোসেন জানান, ধর্মঘটের বিষয়ে আনোয়ার হোসেন সোনা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন সোনার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।
খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির অন্যতম এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে উপর থেকে, এমনকি বিএনপিকে বাস রিজার্ভ দিতেও নিষেধ করা হয়েছে।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব গতকাল রাতে খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছিলেন, আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনা থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাস মালিক সমিতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শ্রমিক ইউনিয়ন এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
এদিকে আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। ওই দিন দুপুরে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হাসান বাপ্পী অভিযোগ করেন, খুলনার বিভিন্ন উপজেলা ও বিভাগের নয়টি জেলা থেকে সমাবেশে নেতাকর্মীদের আগমন বাধাগ্রস্ত করতে পরিকল্পিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিষয়টি তারা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন। সে অনুযায়ী তারা প্রস্তুতিও নিয়েছেন।
মনিরুল হাসান বাপ্পী বলেন, বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীদের যেকোনোভাবে সমাবেশে আগেভাগে আসতে বলা হয়েছে। নেতাকর্মীরা আগে এসে খুলনা নগরীর আবাসিক হোটেল ও আত্মীয়দের বাসায় অবস্থান করবেন।
প্রসঙ্গত, খুলনা থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার ২০০ বাস দেশের ১৮টি রুটে চলাচল করে।