ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সর্বগ্রাসী আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। শেরে বাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শেরে বাংলা একেএম ফজলুল হকের ৬০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনার বিষয় ছিল ‘আজকের প্রেক্ষাপটে শেরে বাংলার প্রাসঙ্গিতকতা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মূল গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা থেকে একেবারে সরিয়ে দিয়ে পুরো একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই সরকার এগুলো পরিকল্পিতভাবে করছে।’

ফখরুল বলেন, ‘নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আজকে সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে (আ.লীগ)। ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে সংঘর্ষ হলো, দুজন প্রাণ দিলেন। এটাতে পুলিশ প্রথমে কি করল?’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে একজনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠাল। অথচ দেখা যাচ্ছে যে, এর জন্য মূলত দায়ী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। যারা অস্ত্র হাতে নিয়ে আক্রমণ করেছে এবং ওই দুই জনকে হত্যা করেছে। আবার দেখুন ওই পাশেই কলাবাগানে যে পার্ক দখল, বাচ্চাদের যে ফুটবল খেলার মাঠ, সেই মাঠ দখল সেখানে থানা বানাচ্ছে। এরকম অসংখ্য ঘটনা আছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে মানুষের নিরাপত্তা তো দূরের কথা, কী করে তাঁদের আরও বেশি করে হয়রানি করা যায়, সেই ঘটনাগুলো চলছে। পরিকল্পিতভাবে রাজনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে, বিরোধী রাজনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে আমরা শেরে বাংলা ফজলুল হক সম্পর্কে একেবারেই ভুলতে বসেছি। আমাদের পাঠ্যপুস্তক বাদ দিন, অন্যান্য যে বইপত্র রচনা হয়, সেখানেও তাঁর প্রাসঙ্গিকতা সেভাবে আসে না। আজকে পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে কিন্তু একজন নেতা ছাড়া কারও কোনো নাম গন্ধ নেই। আমাদের ছোট ছোট নাতি-নাতনি, যারা স্কুলে পড়াশুনা করে, সেখানে কিন্তু তারা একজনের নাম জানে, অন্য কারও নাম জানে না।’

শেরে বাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি আখতারুল আলম খানের সভাপতিত্বে ও সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের সদস্য ইশরাক হোসেন এবং শেরে বাংলার নাতনি ফাহসিনা হক লীরা বক্তব্য রাখেন।