কোটি টাকার রাস্তা সংস্কার চলছে দায়সারাভাবে
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় কোটি টাকা বাজেটের রাস্তা সংস্কার কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৪ নম্বর শাল্লা ইউনিয়নের ইয়ারাবাদ থেকে কান্দখলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় ইট, খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর মাঝেই রাস্তাটি সম্পূর্ণভাবে সংস্কার না করে যেখানে ভাঙা ও গর্ত আছে, শুধু সেখানেই ইটের খোয়া দিয়ে সংস্কারকাজ চলছে। যদিও সম্পূর্ণ রাস্তাটি নতুন করে সংস্কার করার জন্য বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দায়সারাভাবে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা রাস্তাটি ব্যবহারে জনগণের ভোগান্তি ছিল চরমে। এখন আবার সংস্কারের নামে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে সংস্কারের কয়েক মাসের মধ্যে আবারও রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
শাল্লা উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ইয়ারাবাদ থেকে কান্দখলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারকাজে এক কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রাস্তাটি সংস্কারকাজ করছে সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফিক এন্টারপ্রাইজ।
স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার বলেন, ‘রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কারহীন ছিল। যে কারণে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এখন রাস্তাটি পুনর্নির্মাণের জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকার টেন্ডার হলেও ঠিকাদার নিম্নমানের ইট, বালু ও পাথর দিয়ে কাজ করছে। এভাবে কাজটি শেষ করলে এক বর্ষা মৌসুমেই রাস্তাটি আবারও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে।’
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি দুই বছর ধরে সংস্কারহীন ছিল। ক্ষতি হবে জেনেও শুধু গ্রামবাসীর কথা চিন্তা করেই এক কোটি ২০ লাখ টাকার টেন্ডার হওয়ায় রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু করি।’
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন এমন অভিযোগের জবাবে ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে এলজিইডি থেকে লোকজন এসে ল্যাবে পরীক্ষা করার জন্য ইটের খোয়া নিয়ে গেছে। তাঁরা বলেছেন, আরো ভালো মানের ইটের খোয়া ব্যবহারের জন্য। তবে রাস্তাটির নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বলেনি।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইশতিকার হোসেন বলেন, ‘আমি শাল্লায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখব। যদি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়, তাহলে আমি বিল আটকে দেব। কোনো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা যাবে না।’