কুমিল্লায় সাংবাদিক নাঈম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪
কুমিল্লায় সংবাদকর্মী মহিউদ্দিন সরকার নাঈমকে গুলি করে হত্যার একদিন পর করা মামলায় চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত নাঈমের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলাটি করেন। এতে তিন জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত অন্তত পাঁচ জনকে করা হয় আসামি।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লমগীর হোসেন আজ শুক্রবার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, 'গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজই আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড চাওয়া হবে।'
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন—মো. ফরহাদ মৃধা মনির (৩৮), মো. পলাশ মিয়া (৩৪), নুরু মিয়া ও সুজন।
এর আগে মামলার বিষয় নিশ্চিত করে ওসি আলমগীর হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার জানান, নাঈম হত্যা মলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের রাজুকে।
রাজু ‘মাদকব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া একাধিক মামলার আসামি বলে জানা গেছে।
নাঈমের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন সরকারের দাবি, নাঈম মেধাবী ও সাহসী ছিলেন। মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
ওসি আলমগীর জানান, কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ স্যারের নির্দেশনায় এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আমার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামে জানাজা হয় নাঈমের। পরে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, মহিউদ্দিন সরকার নাঈম স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক। এর আগে তিনি একটি টিভি চ্যানেলে কাজ করতেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। বিজিবির বরাতে দুই যুবকের দাবি, মাদক কারবারির গুলিতে নাঈম নিহত হয়েছেন।
হায়দ্রাবাদ এলাকার রাব্বি ও রুবেল নামে ওই দুই যুবক জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুজন বিজিবি সদস্য মহিউদ্দিন সরকার নাঈমকে গুরুতর আহত অবস্থায় এনে হাসপাতালে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। ওই সময় বিজিবি সদস্যরা জানান, সীমান্তে মারামারিতে আহত হয়েছেন নাঈম।
পরে আহত নাঈমকে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুজাহিদুল ইসলাম মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবরে ওই রাতেই ১ টার দিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদসহ পুলিশের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত সাংবাদিক নাঈমের সঙ্গে ছিলেন, এমন দাবিতে পলাশ নামে এক যুবক বলেন, ‘তাঁরা সীমান্তে একটি দোকানে বসে ছিলেন। এসময় রাজুর নেতৃত্বে একটি দল এসে মহিউদ্দিনের ওপর গুলি চালায়।’
এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, সাংবাদিক নাঈম গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ আসেনি।
এরপর রাতে নিহত নাঈমের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে রাজুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন।