স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের প্রক্রিয়া আগামী দুই দিনের মধ্যেই জানা যাবে।

আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সচিব। এ সময় তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

করোনার টিকার ট্রায়াল বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মান্নান বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে বিভিন্ন দেশের নয়টি কোম্পানি কাজ করছে। এরমধ্যে পাঁচটি কোম্ম্পানির সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা চীনের কোম্পানিকে ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছি। তারা ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া আর তুরস্কে অনেক বিনিয়োগ করেছে। ট্রায়াল শুরু করার জন্য দুই দিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে আমাদের তাদের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে। আমরা আশাবাদী, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা এগিয়ে আসবে। আইসিডিডিআর.বি সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’

সচিব আরো বলেন, এ ছাড়া ভারতের কোম্পানিও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। রাশিয়ার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের ওষুধ কোম্পানিগুলোকে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। ইনসেপটা, পপুলার, বেক্সিমকো, হেলথ কেয়ার, স্কয়ারসহ বড় কোম্পানিগুলোর কথা তারা আমাদের বলেছে। বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের কোম্পানিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

টিকার অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা এ খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রেখেছি। প্রয়োজনে অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে যেন ভ্যাকসিন আনতে পারি। একটি বিদেশি প্রোজেক্টের আওতায় আমরা ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রেখেছি।’

সচিব আরো বলেন, ‘আমরা আড়াই থেকে তিন মিলিয়ন ভ্যাকসিন আনতে চাচ্ছি প্রথমেই। যারা ফ্রন্টলাইনার, তারা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ারর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। সাংবাদিকরাও ঘরের বাইরে কাজ করছে, তারাও গুরুত্ব পাবে। সাধারণ মানুষের জন্য কতটা অ্যাভেইলেবল করা যায় সেটি দেখছি। তবে যারা বয়স্ক মানুষ এবং বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছে তাদের আমরা অগ্রাধিকার দেব।’

আগামী দিনে করোনা আরো বাড়তে পারে কি না এবং এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কতটা প্রস্তুত জানতে চাইলে সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতির ব্যাপারে আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা করব। করোনার দ্বিতীয় আঘাত (সেকেন্ড ওয়েভ) কেমন হতে পারে, বিভিন্ন দেশে কেমন আঘাত হানছে, আমরা কতটা প্রস্তুত- সেসব আলোচনা হবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে কী কী প্রস্তুতি আছে সেসব নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করেছি। করোনা এখন সহনশীল অবস্থায় আছে। তবে প্রত্যাশার বাইরে কিছু হলে কীভাবে মোকাবেলা করব তার প্রস্তুতি আমাদের আছে। আইসোলেশন সেন্টার, ডাক্তারদের থাকার ব্যবস্থা, নন-কোভিড হিসেবে যেসব হাসপাতালকে এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলোকে কীভাবে দ্রুত কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা যায়- সেগুলোর বিষয়ে আমরা লক্ষ রাখছি।’