করোনা উপসর্গে মৃত, লাশ দাহে বাধার অভিযোগ
বরিশালে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর এক ব্যক্তির মরদেহ সৎকারে বাধার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল মহাশ্মশানে এ ঘটনা ঘটে।
বরিশাল নরসুন্দর কল্যাণ ইউনিয়নের সভাপতি নির্মল চন্দ্র বলেন, ‘নগরীর চাঁদমারি খেয়াঘাট এলাকায় নিখিল হেয়ার ড্রেসারের মালিক নিতাই চন্দ্র শীল (৫৪) বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আজ সকালে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ধর্মীয় রীতিনীতি শেষে সৎকার সম্পন্ন করতে বরিশাল মহাশ্মশানে নেওয়া হয়। তবে নানা অজুহাতে শ্মশান থেকে মৃতদেহসহ তাদের স্বজনদের সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়।’
‘পরে শ্মশান কমিটি মেডিকেল সার্টিফিকেট চাইলে তা এনে দেখানো হয়। পরে তারা জানায় সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা না হলে সৎকার কাজ এখানে হবে না। একবার তারা ভোটার আইডি দেখতে চায় আবার কিছুক্ষণ পর কাউন্সিলরের সনদপত্র দেখতে চায়। সেগুলোও আনা হয়।’
নির্মল চন্দ্র আরো বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টির মধ্যে মরদেহসহ স্বজনদের শ্মশানের বাইরে অমানবিকভাবে দাঁড় করিয়ে রাখে শ্মশান কমিটি। এখন এখানে দাহ সম্পন্ন হবে কি না সে বিষয়েও নিশ্চিত নই আমরা।’
এ বিষয়ে বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুডু বলেন, ‘বিকেল ৪টার দিকে মৃতদেহটি শ্মশানে আসে। যিনি মারা গেছেন তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাই নিয়ম-কানুন মেনে আমরা মৃতদেহ সৎকার করবো। এ ছাড়া শ্মশানে একটি মৃতদেহ সৎকারের কাজ চলছে তাই তাদের বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদের কাজ শেষ হলে তারা ডিসি, সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সৎকার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।’
মহাশ্মশানে দাহ করার স্থান তিনটি রয়েছে তবুও কেন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে মানিক মুখার্জী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তাই আমরাও আতংকিত।’
বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিৎ দত্ত লিটু বলেন, ‘আমরা বিষয়টি শুনে সঙ্গে সঙ্গে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা মূলত আতংকিত ছিল। বিষয়টি সমাধান করা হচ্ছে।’
এদিকে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, করোনা ওয়ার্ডে নিতাই চন্দ্র শীল মারা গেলেও তাঁর রিপোর্ট না পেয়েই ‘তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন’ বলে জানাচ্ছে শ্মশান কমিটি।