কবি মমিনুল মউজদীন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন
মরমি সাধক হাসন রাজার প্রপৌত্র ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার তিনবারের পৌর চেয়ারম্যান প্রয়াত কবি মমিনুল মউজদীনের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভা ও কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, মমিনুল মউজদীন একজন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন। তিনি জোছনা উপভোগ করার জন্য রাতে শহরের সড়ক বাতি নিভিয়ে দিতেন। এতে তাঁর সৃজনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন শিল্পকলা একাডেমির আবদুল হাই মিলনায়তনে শুক্রবার সকালে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মমিনুল মউজদীন স্মৃতি সংসদ। ২০০৭ সালের এই দিনে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মমিনুল মউজদীন, তাঁর স্ত্রী তাহেরা চৌধুরী, ছেলে কাহলিল জিবরান ও ব্যক্তিগত গাড়িচালক কবির মিয়া মারা যান। স্মরণসভার আগে তাঁদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও বিশেষ মোনাজাত হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে।
স্মরণসভা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক বিশিষ্ট আইনজীবী হোসেন তওফিক চৌধুরী। বক্তব্য দেন মমিনুল মউজদীনের শিক্ষক ধূর্জটি কুমার বসু, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব পারভেজ আহমেদ চৌধুরী, হাসন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক আলী হায়দার, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম বজলু, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, মমিনুল মউজদীনের ছোট ভাই সমাজকর্মী দেওয়ান গনিউল সালাদীন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ তারিক হাসান দাউদ, পৌর কাউন্সিলর আহমদ নূর, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল নোমান, সমাজকর্মী দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী সুমন, কলেজশিক্ষক মশিউর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা সাজিদুল ইসলাম ও আবু সাদাত আহমদ, সাংবাদিক খলিল রহমান, এ আর জুয়েল, মাওলানা এমদাদুল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মমিনুল মউজদীনের কবিতা পাঠ করেন দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী, দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, তাজকিরা হক, দুর্বার সামিত, সোহানুর রহমান, শিপন ও সিন্থি প্রমুখ।
বক্তারা আরো বলেন, মমিনুল মউজদীন সুনামগঞ্জ থেকে ২০০২ সালে মাদকের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন। পরে সেটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। একইভাবে তিনি পরীক্ষায় নকলের বিরুদ্ধে, প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দেশব্যাপী পরিচিতি পান। তিনি গতানুগতিক কাজের বাইরে পৌর শহরে একটি কলেজ ও ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সময়ে পৌর শহরের সব মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন এবং মন্দিরের পুরহিতদের ভাতা দেওয়ার বিষয়টি চালু করেন। সৎ, সাহসী, বিনয়ী জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি সব মহলে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।
কবি মমিনুল মউজদীনের দুটি কাব্যগ্রন্থ হলো : ‘এ শহর ছেড়ে পালাবো কোথায়’ ও ‘হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ’।