এসআই জাহিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক অব্যাহত
রাজধানীর পল্লবী এলাকায় পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক অব্যাহত রেখেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে এ মামলার আসামিদের যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ অংশ নেন। তাঁর যুক্তিতর্ক শুনানি আজ শেষ না হওয়ায় বিচারক আগামী সোমবার অবশিষ্ট যুক্তিতর্ক শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বুধবার বাদীপক্ষের আইনজীবী মশিহুর রহমান এসআই জাহিদসহ পাঁচ আসামিদের সর্বোচ্চ দণ্ড (যাবজ্জীবন) প্রত্যাশা করেন। সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানার আবেদন করেন।
এদিকে আজ আদালতে এ মামলার আসামি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ইসলাম হাজির ছিলেন। এ ছাড়া উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ ও পুলিশের সোর্স সুমন কারাগারে আছেন। অপরদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার আসামি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জমান মিন্টু ও পুলিশের সোর্স রাশেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির করেছেন আদালত।
মামলার নথিতে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে জনির প্রতিবেশী সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে আশালীন আচরণ করে। এ সময় জনি ও তাঁর ভাই সুমনকে চলে যেতে অনুরোধ করেন। সুমন ওই দিন চলে গেলেও পরের দিন এসে আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকে। তখন জনি ও তাঁর ভাই তাঁকে আবারও চলে যেতে বললে সোর্স সুমন পুলিশকে ফোন করে তাঁদের ধরে নিয়ে যেতে বলে। তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়ে।
পরে জনি ও তাঁর ভাইকে থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। জনির অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরো খারাপ হলে জনির মা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট তৎকালীন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হকের আদালতে নির্যাতন ও হেফাজকে মৃত্যুর অভিযোগ এনে নিহত জনির ছোট ভা্ই ইমতিয়াজ হোসেন রকি পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি নালিশি মামলা করেন। পরে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
নির্দেশ মোতাবেক ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন এ মামলাটির তদন্ত শেষ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত ও পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।