এবার দুর্গম চরে স্বজনরা ফেলে গেল বৃদ্ধকে
করোনা মহামারির এ সময়ে একের পর এক ঘটছে অমানবিক ঘটনা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ থাকায় সখীপুরের জঙ্গলে বৃদ্ধ মাকে ফেলে যাওয়ার ঘটনার পর এবার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে পাবনায়। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় বেড়া উপজেলায় যমুনা নদীর দুর্গম চরে এক বৃদ্ধকে (৭০) ফেলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন সেন্টারে পাঠিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরের পর যমুনা নদীর দুর্গম চর চরসাফুল্লা গ্রামে ওই বৃদ্ধকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন স্থানীয়রা। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তিনি চরবাসীকে তাঁর পরিচয় জানাতে পারেননি। তিনি কীভাবে ওই চরে এলেন তাও বলতে পারেননি। রোববার ওই বৃদ্ধ চরের এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে গিয়ে পড়ে যান। গ্রামবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন ইউএনও।
ওই দিন বিকেলে ওই গ্রামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন মাঠকর্মী গিয়ে বৃদ্ধকে নামমাত্র চিকিৎসা দিয়ে আসেন। এতে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গতকাল ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরদার মো. মিলন মাহমুদ একটি চিকিৎসা দল নিয়ে সেখানে যান। বৃদ্ধকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করান।
ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ওই বৃদ্ধ কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় নিজের পরিচয় কিংবা কীভাবে চরে এলেন জানাতে পারেননি। তাঁর শরীরে জ্বর রয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা করোনা আতঙ্কে স্বজনরা কোনো নৌকা থেকে তাঁকে ওই চরে ফেলে গেছে।’