এখনও শঙ্কামুক্ত নয় ময়মনসিংহের সেই শিশু, রয়েছে শ্বাসকষ্ট
সড়ক দুর্ঘটনা থেকে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যাওয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই শিশু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও শিশটির শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। পরে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির রক্তশূন্যতাও রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির পর এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে, আবারও দিতে হতে পারে। তবে, তাকে ছুটি দেওয়ার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন মমেক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক এবং শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম।
গত সোমবার রাতে শিশুটিকে লাবিব হাসপাতাল থেকে মমেক হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়। সে সময় জন্ডিসসহ শিশুটির কিছুটা শ্বাসকষ্টও ছিল। এ ছাড়া হাড়েও চিড় ছিল। সেসব সমস্যা কমে এসেছে। তাকে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। আজ সকালেও শিশুটির শ্বাসকষ্ট ছিল।
দুর্ঘটনার পর মায়ের পেট ফেটে ভূমিষ্ঠ এবং অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটি কিছু সময়ের জন্য রাস্তায় পড়ে ছিল। সে কারণে তার মানসিক বা মস্তিষ্কজনিত কোনো সমস্যা দেখতে পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে ডা. মো নজরুল ইসলাম বলেন, ‘না, তেমন কিছু এখনও বুঝতে পারিনি।’
গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ত্রিশাল উপজেলার কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর আলমসহ (৪০) তাঁদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। প্রসবের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করায় আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য ত্রিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই ওই তিন জনের মৃত্যু হয়। তবে, সে সময় অবিশ্বাস্যভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। শিশুটিকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নেওয়ার পরই জানা যায় জীবিত রয়েছে নবজাতক কন্যাশিশুটি।
এদিকে, গ্রেপ্তার করা ট্রাকচালক রাজু আহমেদ শিপনকে দুদিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে তাঁকে ত্রিশাল থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানিয়েছেন ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন।