‘আমি আর পারছি না, খুব প্রেশারের মধ্যে আছি’
‘আমি ও মাসুদ দুজনই অপরাধী। আমার বিরুদ্ধে মামলার রিমান্ড শুনানি ঈদের পর হলে ভালো হয়। কয়দিন ধরে রিমান্ডে আছি। আমি অসুস্থ। ১২-১৩ দিন ধরে আমি কী যে অবস্থার মধ্যে আছি। আমি আর পারছি না। প্রেশারের মধ্যে আছি।’
আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে শুনানির সময় সাহেদ এ কথা বলেন।
শুনানির সময় সাহেদ বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘স্যার, আমি অপরাধ করেছি। ব্যবসা চালু হলে আস্তে আস্তে সবার টাকা ফেরত দিয়ে দেব।’
সাহেদ বিচারককে আরো বলেন, ‘আমি ও মাসুদ দুজনই অপরাধী। আমার বিরুদ্ধে মামলার রিমান্ড শুনানি ঈদের পর হলে ভালো হয়। কয়দিন ধরে রিমান্ডে আছি। আমি অসুস্থ।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদুর রহমান রিমান্ডের পক্ষে শুনানিতে বলেন, ‘বিনা টাকায় করোনা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও আসামি রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। সে একজন মহাপ্রতারক। অসুস্থ না হয়েও গত ১৬ জুলাই আদালতে সে নিজেকে করোনা রোগী বলে দাবি করে। আসামি আষাঢ়ের গল্প বলছে। পুলিশ তার যে রিমান্ড চেয়েছে, আমরা তা মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সাহেদ সব অন্যায় ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে। যারা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের টাকা-পয়সা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে ।’
এ ছাড়া আজ রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে পৃথক তিন মামলায় ২১ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন একই আদালত।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাহেদকে হাজির করা হয়। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে পৃথক চার মামলায় ১০ দিন করে ৪০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
গত ১৬ জুলাই করোনা টেস্ট জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় মো. সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ওই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের ১০ দিন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীর সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল।
গত ১৫ জুলাই সকালে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় দেবহাটার কোমরপুরে র্যাবের হাতে একটি পিস্তল, তিনটি গুলি, একটি ম্যাগাজিনসহ সাহেদ র্যাবের হাতে ধরা পড়েন। পরে তাঁকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা। সেদিন বিকেলে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে সাহেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষা শেষে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আবার ডিবিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডিবি পুলিশ তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়। এরই মধ্যে সাহেদের মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। ডিবি পুলিশ গত ২৩ জুলাই সাহেদকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করে।