আবরার হত্যার অভিযোগপত্রে আসামি ২৫, সরাসরি মারধর করেছে ১১ জন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য (ডিবি) বিভাগ।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আটজন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে আবরারকে মারধরে সরাসরি অংশ নিয়েছেন ১১ জন। এভাবেই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মো. জিসান, আজতেসামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ অর্মত্য ইসলাম, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু, মুজতবা রাফিন।
২৫ জনের মধ্যে ২১ জন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। যে চারজন পলাতক আছেন তাঁরা হলেন- জিসান, তানিন, মোর্শেদের ও রাফিন।
এর মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এস এম মাহমুদ সেতু, রাফিন- এদের নাম এজাহারে ছিল না। পুলিশের তদন্তে এদের নাম বেরিয়ে আসে। এখন তাঁরা আসামি হলেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, নভেম্বরের মাঝামাঝি এই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হতে পারে।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পরের দিন ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১২ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আসামিদের মধ্যে চারজন পলাতক। এজাহারভূক্ত ১৯ আসামির মধ্যে ১৬ জন গ্রেপ্তার আছেন।
মনিরুল আরো বলেন, অভিযোগপত্রে মামলার এজাহারে নাম থাকা ১৯ জন এবং তদন্তে বেরিয়ে আসা আরো ছয়জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এজাহারভুক্তের ভেতরে তিনজন এবং পরবর্তী সময়ে নাম আসাদের ভেতরে একজন পলাতক আছেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আরো বলেন, ‘আবরারকে হত্যার জন্য আমরা একক কোনো কারণ জানতে পারেনি। বিভিন্ন কারণে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। শিবির করা তার মধ্যে একটি। বড়দের সালাম না দেওয়া, আসামিদের উগ্র আচরণ, র্যাগিংসহ নানা কারণে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।’