‘আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কোনো জাতি এগোতে পারে না যদি কোনো নেতা তাদের স্বপ্ন না দেখায়। জিয়াউর রহমান সেই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তিনি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।’
আজ রোববার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগের লোকেরা বিভিন্নভাবে খাটো করতে চায়, খলনায়ক বানাতে চায়। কিন্তু তারা কখনোই মনে করে না সেদিন আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছিল বলেই, তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছিল বলেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের; সেদিনকার মেজর জিয়ার সেই ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। তিনি যুদ্ধ করেছেন, স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। ঠিক তেমনিভাবে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আবার জাতির সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন ত্রাণকর্তা হিসেবে। এই ইতিহাসকে বিকৃত করার সুযোগ নেই।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের আমলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আসার পর তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রথমেই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চাই সেই মহান নেতাকে যিনি বাংলাদেশ নামক জাতির সৃষ্টির জন্য যে যুদ্ধ হয়েছিল, সে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার সেই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজকে যে রেমিট্যান্সের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে, তার সূচনা করেছেন জিয়াউর রহমান সাহেব। যে গার্মেন্টস আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি সেই গার্মেন্টেসের সূচনা করেছিলেন তিনি। শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা নিয়েছিলেন।’
‘আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিল, বাকশাল গঠন করেছিল, মানুষের গলা টিপে ধরেছিল, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নিয়ে এসেছিলেন, মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়ে তারা ভিন্ন আঙ্গিকে এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, সংবাদপত্রের গলাটিপে ধরেছে।’
বিচারবিভাগেরও একই অবস্থা জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জিয়াউর রহমান আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নব্য একনায়ক আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের যে দর্শন তাঁর যে আদর্শ তা যদি অনুসরণ করি তাহলে আমাদের অন্য কোথাও তাকাতে হবে না। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, উন্নয়ন সবকিছু নিয়ে তিনি যে দর্শন তুলে ধরেছেন, সে দর্শন আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হলে আমরা অবশ্যই আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারব।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহাবুবউল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।