আজ গোলাম মুস্তাফার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী
বিশিষ্ট অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, নাট্যকার ও আবৃত্তিশিল্পী গোলাম মুস্তাফা। ১৯৬০ সালে ‘রাজধানীর বুকে’ ছবিতে জমিদারের ভূমিকায় অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু করেন তিনি। জীবদ্দশায় তিনি দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৩ সালে আজকের এই দিনে এই শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী।
প্রথম ছবি থেকেই খলনায়ক চরিত্রে একক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি অনেক ছবিতে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
গোলাম মুস্তাফা ১৯৩৪ সালের ২ মার্চ বরিশালের দপদপিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন সাব-রেজিস্ট্রার। স্কুলজীবন শুরু হয় পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। ম্যাট্রিক পাস করেন খুলনা জিলা স্কুল থেকে। স্কুল-কলেজ জীবনে নাটকে অভিনয় করা তাঁর শখ ছিল। ঢাকায় আসেন পঞ্চাশের দশকের মধ্য সময়ে। সেই থেকে তিনি ঢাকায় স্থায়ী হন।
গোলাম মুস্তাফা বাংলা ও উর্দু মিলে প্রায় তিনশ চলচ্চিত্রে নায়ক, সহনায়ক, খলনায়কসহ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য উর্দু চলচ্চিত্র হচ্ছে—‘পীরিত না জানে রীতি’, ‘কাজল’, ‘চোখাই’, ‘চান্দা’, ‘তালাশ’। বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে—‘আলিবাবা চল্লিশ চোর’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘নিজেকে হারায়ে খুঁজি’, ‘রক্তাক্ত বাংলা’, ‘রূপালী সৈকতে’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সূর্যসংগ্রাম’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’, ‘শুভদা’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’ ইত্যাদি।
গোলাম মুস্তাফা অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয়জীবনে খলনায়ক হিসেবেই বেশি সফল হন। ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হারানো দিন’ ছবিতে মদ্যপ জমিদারের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় সে সময় তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৯৪৫ সালে বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হল মঞ্চে বি ডি হাবিবুল্লাহ রচিত ‘পল্লীমঙ্গল’ নাটকে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। এটাই তার অভিনীত প্রথম মঞ্চ নাটক। পরিণত বয়সে ষাটের দশকের শুরুতে গোলাম মুস্তাফা নাট্যাভিনয় শুরু করেন। সিনেমা ও নাটক উভয় ক্ষেত্রেই তিনি পারদর্শিতা প্রদর্শন করেন।