আগুনে ছেলের পর মায়েরও মৃত্যু, বাবা আইসিইউতে

রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোডের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চার বছর বয়সী শিশু এ কে এম রুশদির পর তার মা জান্নাতুল ফেরদৌসও (৩৮) মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আজ রোববার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর।
এদিকে গুরুতর অবস্থায় রুশদির বাবা শহিদুল কিরমানি রনিকে (৪০) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু হয়।
বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তান মারা গেলেন আগুনে পুড়ে। আর ওই আগুনে ঝলসে শহিদুল কিরমানি আছেন আইসিইউতে। তাঁর অবস্থাও ভালো না। জান্নাতুল ফেরদৌসের শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। শহিদুলেরও শরীরের অনেক অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট চারজন নিহত হয়েছেন।’
দিলু রোডের ওই ভবনে গত বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রথমে ওই ঘটনায় শিশু রুশদিসহ তিনজন নিহত হয়।

ঘটনার দিন রুশদির দাদা এ কে এম শহিদুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান, রুশদি স্থানীয় একটি স্কুলে প্লে শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। দগ্ধ জান্নাতুল ও শহিদুলের একমাত্র সন্তান সে। তাঁরা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটনা গ্রামের বাসিন্দা।
দগ্ধ শহিদুলের ছোট বোন নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমি কেরানীগঞ্জে থাকি। ফোনের মাধ্যমে খবর পাই, ভাই ও ভাবি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। আমার ভাই ও ভাবি একটা কোম্পানিতে চাকরি করে। তাঁরা ওই বিল্ডিংয়ের তিনতলায় ভাড়া থাকেন। তাঁদের একটাই সন্তান। শুনেছি ফায়ার সার্ভিস তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
নিহত তিনজনের মধ্যে রয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম নন্দনপুর এলাকার মোহম্মদ উল্লাহর ছেলে আবদুল কাদের লিটন (৪০)। লিটনের শ্যালক জহির আলম জানান, লিটন ওই ভবনের নিচতলার একটি ছোট কক্ষে থাকতেন। ভবনের দোতলায় ক্ল্যাসিক ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বায়িং হাউসের অফিস সহকারী ছিলেন। তিনি আট থেকে দশ বছর ধরে সেখানে চাকরি করেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে গ্রামে থাকে। আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কারণে রুমের গেট খুলতে না পাড়ায় শ্বাস আটকে তিনি মারা যান।
ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে ঢামেকে ভর্তি হওয়া মনির হোসেন বলেন, ‘রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। কীভাবে আগুন লাগে, বলতে পারি না। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে বাসায় ঢুকে আমাদের উদ্ধার করেন।’