অংশীদারত্ব সংলাপ : র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশ
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে ঐকমত্য পোষণ করেছে দুদেশ।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অংশীদারত্ব সংলাপ শুরু হয়। এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজ নিজ দেশের পক্ষে অংশ নেন।
সংলাপ শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ডোমেনগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সমগ্র অংশের ওপর আমরা খোলামেলা, বিস্তৃত এবং বেশ ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি।’
সচিব আরও বলেন, ‘এ বছরের অংশীদারত্ব সংলাপ দুটি কারণে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, আমরা শিগগিরই কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করব। দ্বিতীয়ত, কোভিড-১৯ মহামারি গত দুই বছরে আমাদের নিয়মিত সংলাপ প্রক্রিয়া ধারণ করতে বাধা দিয়েছে। এ অংশীদারত্বের সংলাপটি প্রকৃতপক্ষে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে প্রথম এবং আসন্ন মাসগুলোতে নির্ধারিত সংলাপের একটি সিরিজের মধ্যেও প্রথম। অংশীদারত্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে আমাদের একসঙ্গে যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আগ্রহী থাকবে।’
এ ছাড়া পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সংলাপে আমরা উভয় পক্ষ একে অপরকে আরও ভালোভাবে বোঝার এবং কিছু বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ পেয়েছি।’
সংলাপে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়ে লিখিত বিবৃতিতে সচিব বলেন, ‘র্যাব এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর আরোপিত সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে, তা শুধু ব্যাখ্যাই করিনি, বরং আমাদের সরকারও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছে—আমরা এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে উন্মুখ। গণতান্ত্রিক চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির মতো বিষয়েও আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় এবং ব্লু ইকোনমিতে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়েও আমরা গভীর আলোচনা করেছি। আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কে আমাদের মতামত বিনিময় করেছি এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নিয়েছি।’
মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, ‘আমাদের দুপক্ষ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে একে অপরকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এটি এমন একটি এলাকা যেখানে আমরা আসন্ন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংলাপে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।’
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে, আমরা জুনের শুরুতে আসন্ন উচ্চ-স্তরের অর্থনৈতিক অংশীদারি পরামর্শে এবং এ বছরের টিআইসিএফএ’র পরবর্তী রাউন্ডে আরও আলোচনার জন্য উন্মুখ।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমি বলব যে, আজকের আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল খুশি ও সন্তুষ্ট। মহামারির কারণে দীর্ঘ বিরতির পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এ বিশেষ অংশীদারত্ব সংলাপ প্রকৃতপক্ষে আসন্ন সেক্টরাল সংলাপে আরও আলোচনার জন্য একটি ট্রিগারিং ডিভাইস হিসেবে কাজ করছে।’