সিফাত-শিপ্রার জীবননাশের শঙ্কা শিক্ষার্থীদের
পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথের জীবননাশের আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা দুই শিক্ষার্থীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এ দুই শিক্ষার্থীর মুক্তিসহ চারদফা দাবিতে আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়টির রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন ও মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিল্ম ও মিডিয়া স্টাডিজ এবং স্টামফোর্ড ফিল্ম স্টুডেন্ট সিনে ফোরামের উদ্যাগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় চার দফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র সানাউল কবীর সিদ্দিকী।
ওই দুই শিক্ষার্থীর মুক্তি ছাড়াও অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার, ওই দুই শিক্ষার্থীকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি, দুই শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারকে সামাজিকভাবে নিরাপত্তা প্রদান। ওই দুই শিক্ষার্থী মুক্তি পেয়ে বাসায় না ফেরা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত একজন ছাত্র বলেন, মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের হত্যার ঘটনায় সরাসরি প্রত্যক্ষদর্শী হলেন সিফাত। এ জন্য জীবননাশের আশঙ্কা বেশি করছেন তাঁরা।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই সময় মেজর সিনহার সঙ্গে থাকা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিফাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁরা যে নীলিমা রিসোর্টে থাকতেন সেখান থেকে শিপ্রা দেবনাথকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মেজর সিনহা গত ৩ জুলাই ঢাকা থেকে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তিনজন ছাত্রছাত্রীসহ ইউটিউব চ্যানেলের জন্য একটি ট্রাভেল ভিডিও তৈরি করতে কক্সবাজার আসেন। প্রায় এক মাস তাঁরা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে শুটিং করেন।
এদিকে ঘটনার বিচার চেয়ে গত বুধবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।
এর আগে গত ২ আগস্ট বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সবাইকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ওসি প্রদীপকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
এরপর গত বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ সাত সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে বাদীপক্ষ তাদের আটক ও পরে রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলালকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন। আর বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।