রাজধানী সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫ ইউনিট
টিকাটুলির রাজধানী সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে।
আজ বুধবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর এই ব্যস্ততম এই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ব্যবসায়ীরা দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। তারপর সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র মোদক এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পলাশ চন্দ্র মোদক বলেন, ‘বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে টিকাটুলির রাজধানী সুপার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯-এর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আমাদের এখানে সংযোগ দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যায়। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় পরে আরো ১০টি ইউনিট এতে যোগ দেয়। সবশেষ সেখানে গেছে আরো তিনটি ইউনিট। এখন মোট ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।’
আজ সকাল থেকেই দোতলা এই মার্কেট খোলা ছিল। নীচতলা ও দোতলা মিলিয়ে ক্রেতাও ছিলেন প্রচুর। সন্ধ্যায় দিকে জমজমাট অবস্থায় হঠাৎ করেই দোতলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে বাইরে বেরিয়ে আসা ব্যবসায়ীরা দাবি করেন। তাঁরা আরো জানান, দোতলায় ১৫-২০টির মতো দোকান ছাড়াও গুদাম রয়েছে। সেখানে বেডসিট, কাপড়, খেলনা ও প্লাস্টিকের দোকান রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দোতালায় ওঠতে না পারায় নিচ থেকে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। তবে উপরে আগুনের কারণে সেই পানি গরম হয়ে নিচে নামার কারণে কাজ করতেও একটু বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসেরা কর্মীরা।
স্থানীয়দের হাতে থাকা মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, আগুনের লেলিহান শিখা উপরের দিকে উঠছে। সন্ধ্যায় আকাশ ধূয়ায় কালো হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী বাইরে বেরিয়ে এসে কান্না ও চিৎকার করছেন। আগুন দেখে অনেক সাধারণ মানুষও সেখানে জড়ো হয়েছে। খবর পেয়ে আশপাশের থানা থেকে তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে হাজির হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ সুষ্ঠুভাবে কারার জন্য সাধারণ মানুষকে মার্কেটের কাছে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে মার্কেটের নিচতলার প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে শুধু ব্যবসায়ী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ছাড়া আর কাউকে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানী সুপার মার্কেট বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এখানে ছোটবড় কয়েক হাজার দোকান রয়েছে। এটি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। একতলা পাকা ভবনের উপর টিনের দোতলা এই মার্কেটের চারপাশেই রাস্তা রয়েছে। ফলে মার্কেটের চতুর্দিকে আটটি প্রবেশ পথ রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, মার্কেটের পূর্ব পাশে শার্ট-প্যান্টের দোকান, পশ্চিম পাশে খাবার, শাড়ি, হাড়ি-পাতিল, জুতার দোকান, উত্তর পাশে রয়েছে থান কাপড়ের দোকান আর দক্ষিণ পাশে জুয়েলারি ও কসমেটিকসের দোকান রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরো জানায়, এখানে দেশি পণ্যের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ভারত, জাপান, চায়না এবং পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত পণ্য সামগ্রীও পাওয়া যায়। বিদেশি পণ্যগুলোর মধ্যে কাপড়, স্যান্ডেল ও কসমেটিক্স সমাগ্রী রয়েছে।