‘যুবলীগের মহানগর কংগ্রেস জাতীয় কাউন্সিলের পর’
আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের পর যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের কংগ্রেস হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন ছাড়া নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
আজ শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
আগামীকাল শনিবার যুবলীগের এই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশনে উপস্থিত থেকে কংগ্রেস উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় সেশনে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে। সরকারের মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতুর আদলে গড়ে তোলা হয়েছে উদ্বোধনী মঞ্চ।
কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের দিন মহানগর যুবলীগের উত্তর-দক্ষিণের নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্মেলন ছাড়া উত্তর-দক্ষিণ কমিটি আমরা করব কীভাবে? আমরা আশা করছি, আমাদের জাতীয় কাউন্সিলের পর মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজন করবে যুবলীগের নতুন কমিটি।’
যুবলীগের কংগ্রেস নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুবলীগের নেতৃত্ব বাছাই কাউন্সিলররা ঠিক করবেন। তাঁদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। তাঁদের সম্মতিতে পরবর্তী নেতৃত্ব আসবে। নেতৃত্বের দ্বার উন্মোচনে অবশ্যই আমাদের অভিভাবক সভাপতি রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার মূল্যবান পরামর্শ আমরা নেব। এখানে কে নেতা হবেন, এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘অধিক প্রার্থী থাকলে তাদের একজন হওয়ার জন্য সময় দেব। সেই সময়সীমার মধ্যে কম্প্রোমাইজ না হলে উপস্থিত নেতারা এবং সর্বোপরি আমাদের নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে নতুন কমিটির চেয়ারম্যান-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘পরবর্তী নেতা হিসেবে যদি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির রক্তের উত্তরাধিকারের কাউকে এখানে চাওয়া হয়, সেটা অবশ্যই যুবলীগের অধিকার আছে।’
যুবলীগের অনেকের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে সংশ্লিষ্টতা না থাকার নির্দেশ রয়েছে, এ ক্ষেত্রে সম্মেলনে কারা থাকতে পারবে, কারা থাকতে পারবে না-এ ধরনের কোনো নির্দেশনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যতক্ষণ না যুবলীগের সম্মেলন কাউন্সিল অধিবেশন ও বিদায়ী কমিটি বিলুপ্ত হবে, যুবলীগের যারা আছেন তাঁরাই কাজ করবেন। আপনারা এর আগে লক্ষ্য করেছেন, বিদায়ী কমিটির বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কিন্তু থাকবেন না। কিন্তু কাউন্সিল পর্যন্ত বর্তমান কমিটিতে যারা আছেন, তাঁরা বয়সের ক্যাটাগরিতে এখানে কাজ করবেন। কাজ করবেন পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচনে। এখন যারা আছেন, তাঁরা নতুন কমিটি ঘোষণা পর্যন্ত সম্মেলনে থাকতে পারবেন।’
বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিএনপি দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাচ্ছে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের সবকিছুর ওপর এখন নিয়ন্ত্রণ আছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই এক জায়গায়, সেটা হচ্ছে বিএনপির মুখের ওপর। তাদের যে মুখের ভাষা, মিথ্যাচার-অপ্রপচার, তার ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’
অনেক জায়গায় এখনো যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি-এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সড়ক পরিবহন নিয়ে যে সমস্যা ছিল, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পর গভীর রাতে এটা সমঝোতা হয়েছে, সমাধান হয়েছে। গতকাল থেকে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় সব ধরনের যান চলছে। কোথাও কোথাও বিঘ্ন ঘটেছে, এটা আজ থেকে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম, যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি প্রমুখ।