১৬ বছর দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি করার পরও চাকরি নিয়মিতকরণ না হওয়ায় মানববন্ধন করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ছয় কর্মচারী। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ফটকের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি করার পর চাকরি নিয়মিতকরণের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করেন তারা। হাইকোর্টে যাওয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ করোনার সময়ে গত ঈদুল ফিতরের আগ মুহূর্তে তাদের অফিস থেকে বের করে দেয়।

দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করা অফিস সহায়ক মো. সিরাজ উদ্দিন মানববন্ধনে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বরাবর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট প্রস্তাব প্রেরণের পত্র দেওয়া হলেও বোর্ড কর্তৃক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত ১৪ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট ‘বিদ্যমান শূন্যপদে বাদীগণকে কেন নিয়োগ করা হবে না’ মর্মে চার সপ্তাহের সময় দিয়ে রুল জারি করার পরেও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান প্রশাসন কোনো জবাব দাখিল করেনি। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্যের সামিল।

অফিস সহায়ক মো. মাহফুজুল হক বলেন, ‘মাস্টাররোলের কর্মচারীরা পূর্ব প্রচলিত নিয়োগের ধারাবাহিকতায় বোর্ডে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতোপূর্বেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা’সহ অন্যান্য বোর্ডগুলোতে মাস্টাররোলে নিয়োগ দিয়ে পরবর্তীতে অ্যাডহক নিয়োগের মাধ্যমে অনেকের চাকরি নিয়মিতকরণ করা হয়েছে।’

মাস্টাররোলে নিয়োজিত তিনজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও ছয়জন অফিস সহায়ক চাকরি নিয়মিতকরণের জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন জানিয়ে অফিস সহায়ক আবদুল লতিফ তালুকদার বলেন, ‘মামলা দায়ের করার কারণে সাতজন কর্মচারীকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। অন্য দুইজন কর্মচারী দিয়ে অদ্যাবধি কাজ করানো হচ্ছে।’

দীর্ঘ পাঁচমাস কর্মহীন থাকায় ওই সাতজন কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে আর্থিক সমস্যায় আছেন জানিয়ে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘ সময় কাজ করার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সরকারি চাকরিতে আবেদন করার বয়স অনেক আগেই অতিক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে তারা অন্য সরকারি দপ্তরে আবেদন করার সুযোগও হারিয়েছেন। এ কারণেই ১৬ বছর কাজ করার পরও চাকরি নিয়মিতকরণ না হওয়ায় তারা মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন।