‘ইতালির নাগরিকের’ মিথ্যাচার, করোনা ঝুঁকিতে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা
ইতালির পাসপোর্টধারী নাগরিক ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিনি। ইউরোপের অন্য একটি দেশে যেতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফলাফল এসেছে ‘করোনা পজিটিভ’। কিন্তু বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে কম্পিউটারের দোকান থেকে করোনা নেগেটিভের সনদ সংগ্রহ করেন।
কম্পিউটারের দোকান থেকে সংগ্রহ করা ওই সনদ দাখিল করেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হেলথ ডেস্কে। কিন্তু সনদে থাকা কিউআর কোডটি স্ক্যান করে স্বাস্থ্যকর্মীদের চক্ষু চড়কগাছ! যাত্রীর যে কোভিড-১৯ পজিটিভ। ঘটনা আজ বৃহস্পতিবার ভোরের।
বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে হেলথ ডেস্কের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে যাত্রীর তথ্য ইনপুট দিয়ে কোভিড সনদ প্রিন্ট করান। সেখানেও ওই যাত্রীর কোভিড পজিটিভ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। অথচ যাত্রীর কাছে থাকা প্রিন্ট কপিতে দেখাচ্ছিল কোভিড নেগেটিভ!
ওই যাত্রী করোনা পরীক্ষার ফলাফল পাল্টে সবাইকে করোনার ঝুঁকিতে ফেলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল।
আহমেদ জামিল ওই যাত্রীর নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে তিনি বলেছেন, তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ওই যাত্রী ইউরোপের একটি দেশে যাচ্ছিলেন। তিনি ইতালির পাসপোর্টধারী ও নাগরিক হলেও যাচ্ছিলেন মূলত ইউরোপের অন্য একটি দেশে। যাত্রী আমার কাছে স্বীকার করলেন, তিনি একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে তাঁর দাখিলকৃত সনদটি প্রিন্ট করিয়েছেন। সেখানে শুধু পজিটিভের স্থানে নেগেটিভ বসিয়ে নিয়েছেন।’
অর্থাৎ ওই যাত্রী জেনেশুনে মিথ্যাচার করেছেন এবং কোভিড বিস্তারের ঝুঁকি বাড়িয়েছেন। এবং এই অপরাধে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান আহমেদ জামিল। তিনি বলেন, ‘পরে সকালের দিকে তাঁকে আমরা বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি। কর্মকর্তারা তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘একটি উন্নত দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করার পরও এ যাত্রীর মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হয়নি। বাংলাদেশের সিস্টেমকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খুব সহজে ফাঁকি দিয়ে বিদেশ চলে যাবেন ভেবে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। এতে তিনি বিমানবন্দরের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পরিচ্ছন্নকর্মী, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মচারী এবং ম্যাজিস্ট্রেট; সবাইকে কিছুটা হলেও কোভিড সংক্রমণ ঝুঁকিতে ফেলেছেন। যদিও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।’