দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি মূল্যবোধকে ধ্বংস করছে: ভিপি নুর

Looks like you've blocked notifications!
ধর্ষণ, খুন, দুর্নীতি বন্ধ ও ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ছবি : এনটিভি

শিক্ষকদের কঠোর সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পর্যন্ত সব জায়গায় দলীয় এক লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির মাধ্যমে মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। যখন ঢাবির শিক্ষকরা ভোট কারচুপির সঙ্গে জড়িত থাকেন তখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আমাদের সেই শ্রদ্ধাবোধটুকু থাকে না। তখন শিক্ষকরা জাতির বিবেক নাকি জাতির চোর তখন সেটা আমাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগে।’

আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন ডাকসুর ভিপি। খুন, ধর্ষণ ও দুর্নীতির প্রতিবাদে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ডাকে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে নুর বলেন, আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি ৯ মাসের শিশু থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। একটি শিশু ও ফুলকে পবিত্রতার প্রতীক বলা হয়। কিন্তু এই পাষণ্ড চোরেরা ফুলের দিকে যৌনতার দৃষ্টিতে তাকায়। আজকে আমরা দেখি অপরাধ করে অপরাধের অপরাধীরা ক্ষমতার জোরে পার পেয়ে যায়।

ডাকসু ভিপি বলেন, ‘এদেশে অন্যায়-অবিচার যেদিকে যাচ্ছে, আজকে যদি আমরা না জাগি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। পরবর্তী প্রজন্ম আমাদেরকে ধিক্কার দেবে। আজকে আমরা সমাজের মানুষের মধ্যে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় লক্ষ্য করছি। সেই জায়গা থেকে যদি ছাত্ররা প্রতিবাদ না করে, তাহলে আমাদের আগামীর সমাজ অন্ধকারে ধাবিত হবে।’

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চিরাচরিত সমাজব্যবস্থা আজ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। ছয় মাসের শিশুকে পর্যন্ত ধর্ষণ করা হচ্ছে। একের পর এক এ রকম অনেক ঘটনা ঘটছে, কিন্তু এগুলোর কোনো বিচার হচ্ছে না।’

ধর্ষকদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘এই ছাত্রসমাজ যখন মাঠে নামবে না, যখন ডাকসু চুপ হয়ে থাকবে, যখন বিচার বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করবে, এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভালো কিছু আমরা লক্ষ্য করি না। অতিসত্বর দায়িত্বশীল যারা আছেন তারা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে ধর্ষকদের আইনের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করান। আমাদেরকে বারবার ফাঁকা বুলি শোনাবেন না।’

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্ষকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি এটা সরকারের ব্যর্থতা। শিশু সামিহা কী অপরাধ করেছিল? কোনো কি অপরাধ করেছিল? একের পর এক অপরাধ ঘটেই চলছে, এখনো এর বিচার পাইনি।’

যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আজকের তরুণ সমাজকে জাগতে হবে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় অন্যায় দেখছি, কিন্তু ভয়ে কোনো কথা বলি না, চুপসে যাই। আজকে খুনিরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা তারা মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। এজন্য আজকের তরুণ সমাজকে জাগতে হবে।’

এর আগে আজ বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয় কর্মসূচি। মিছিলটি টিএসএসি, দোয়েল চত্বর, মৎস্য ভবন মোড় ও হাইকোর্টোর সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে কার্জন হলে আসে। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে ফের অপরাজেয় বাংলায় এসে শেষ হয়।

মানববন্ধনে ছাত্র পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।