হুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার ৭ বছর

Looks like you've blocked notifications!

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৯ জুলাই। এ উপলক্ষে তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে এলাকার দুস্থ-এতিম বাচ্চাদের খাওয়াবেন। সকাল থেকে হুমায়ূন আহমেদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া-দরুদ পড়া হবে। দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করবেন শাওন।

এনটিভি অনলাইনকে এমনটিই জানিয়েছেন নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ স্যার (হুমায়ূন আহমেদ) যেভাবে উনার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতেন, ঠিক সেভাবে ম্যাডাম স্যারের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন। স্যার এতিম শিশুদের খাওয়াতেন, সকাল থেকেই কোরআন খতম পড়াতেন। আমরাও একই ধরনের আয়োজন করছি।’

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালে ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার ও গীতিকার। আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ বলা হয় তাঁকে। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত।

সত্তর দশকের শেষভাগ থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তাঁর সৃষ্ট হিমু এবং মিসির আলী ও শুভ্র চরিত্রগুলো বাংলাদেশের তরুণদের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে ওঠে।

হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোও দর্শকপ্রিয়তা পায়। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলো ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশি না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি।

হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত উল্লেখ্যযোগ্য চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

২০১১ সালে তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। দেশ ও দেশের বাইরে অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারা যান কিংবদন্তি এই লেখক। নুহাশপল্লীর লিচুতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।