‘এই মজুরিতে শ্রমিকদের মঙ্গল হবে না’

Looks like you've blocked notifications!
ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবিতে সমাবেশ করে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। ছবি : সংগৃহীত

‘ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকার প্রস্তাবনা শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা। এই খাত আন্তর্জাতিক শিল্প হওয়ায় এখানে বায়ারদের সাথে দরকষাকষি বিষয়টা সরাসরি সংযুক্ত। কাজেই মজুরি নির্ধারণের ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতি আমলে নেওয়া হয়নি। এই মজুরিতে শ্রমিকদের মঙ্গল হবে না।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা। ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি বিক্ষোভ মিছিলও করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সংগঠনটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

 বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দীপক রায়, দপ্তর সম্পাদক মুসা কলিমুল্লাহ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ এফ এম নুরুল ইসলাম, বাবুল হোসেন প্রমুখ।

নেতারা বলেন, ‘অনেক টালবাহানা এবং সময়ক্ষেপণ শেষে শ্রমমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে আট হাজার নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করলেন এবং বাকি ছয়টি গ্রেডের ঘোষণা করেন নাই। রপ্তানি আয়ের শীর্ষখাত হওয়ার পরও অপ্রতুল এই মজুরি ঘোষণায় শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি এ মজুরি প্রত্যাখান করে।’

নেতারা বলেন, ‘এই প্রস্তাবনা শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা। এই খাত আন্তর্জাতিক শিল্প হওয়ায় এখানে বায়ারদের সাথে দরকষাকষি বিষয়টা সরাসরি সংযুক্ত কাজেই মজুরি নির্ধারণের ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতি আমলে নেওয়া হয়নি। একদিকে মালিকদের সক্ষমতা বেড়েছে, রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে কিন্তু ততটাই জবাবদিহিতা কমেছে এবং অন্যদিকে সারাবিশ্বে আমাদের কাজের সুনাম রয়েছে যাকে বলা হচ্ছে মেড ইন বাংলাদেশ সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বরং মালিকেরা সরকারের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে উৎসকর কর্তণসহ নানান নতুন নতুন প্রণোদনা আদায় করে চলেছে।’

নেতারা বলেন, ‘যথার্থ মজুরি বৃদ্ধি পেলে যেখানে শ্রমিকদের দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতার বিকাশ পেত; শিল্পের বিকাশসহ দেশের অর্থনীতিই পাল্টে যেত সেখানে শ্রমমন্ত্রী উল্টো ঘোষণা দিলেন। আমরা মনে করি, এই মজুরিতে শ্রমিকদের মঙ্গল হবে না। নতুন মজুরিতে খাদ্য ভাতা মাত্র ৯০০ টাকা, বাসাভাড়া দুই হাজার ৫০ টাকা। এই টাকার খাবার খেয়ে আর এই টাকার বাসাভাড়ায় থেকে আন্তর্জাতিক মানের উৎপাদনশীলতা পাওয়া যাবে না। আর যদি তা যায়ও তা শ্রমিকরা শরীরের আগাম রক্ত বিক্রি করার ওভারটাইমের মধ্য দিয়ে প্রদান করবে। কাজেই প্রতিটি শ্রমিককে আরো বেশি করে ওভারটাইম করার গ্রাউন্ড বহাল রাখল এই নতুন মজুরি।’

নেতারা আরো বলেন, ‘দেশে অতি ধনীদের সংখ্যা বাড়ছে, টাকা লোপাট হয়ে পাচার হচ্ছে। কিন্তু কারখানা মালিকদের আন্তর্জাতিক বায়ারদের সাথে যথেষ্ট দরকষাকষির সক্ষমতা যেমন নাই, তেমনি নিয়মিতভাবে শ্রমিকদের মজুরিসহ প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এগুলো বন্ধ করতে হবে।’

সমাবেশ থেকে অবিলম্বে আট হাজার টাকা মজুরির প্রস্তাবকে পুনর্মূল্যায়ণ করে নিম্নতম সর্বমোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানানো হয় এবং অঘোষিত বাকি ছয়টি গ্রেডের ন্যায্য মজুরির ঘোষণা চাওয়া হয়।