রাউধা হত্যা মামলা সিআইডিতে
রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মালদ্বীপের মডেল রাউধা আতিফের হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলাটিও তদন্ত করবে সিআইডি।
আজ শুক্রবার সিআইডি রাজশাহী বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। সিআইডি রাজশাহীর পরিদর্শক আসমাউল হককে মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন শাহ মখদুম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার আলী তুহিন। তবে অপমৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করছিলেন রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম।
ড. নাজমুল জানান, সকালে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা দুটি মামলারই কাগজপত্র আগের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন। রাউধা মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দুটি হলেও ঘটনা একই হওয়ায় সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা একটি ঘটনারই তদন্ত করবেন। এরপর তদন্তে যা পাওয়া যাবে, সে অনুযায়ী অভিযোগপত্র দাখিল হবে।
গত ২৯ মার্চ রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাউধা এ কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়, রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে বিছানায় রাখা হয়েছিল।
এ ঘটনায় ওই দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। নীল চোখের অধিকারী রাউধা মালদ্বীপের একজন উঠতি মডেল ছিলেন। মাত্র একুশ বছরের রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি।
রাউধার লাশের ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনার পর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে ঘটনা তদন্ত করে যান। এরপর দেশে ফিরে গিয়ে তাঁরা জানান, রাউধাকে হত্যার কোনো প্রমাণ তাঁরা পাননি।
রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। তবে গত ১০ এপ্রিল রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, রাউধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
এ মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মীরে। তিনি ছিলেন নিহত রাউধার সহপাঠী। রাউধার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল সবচেয়ে বেশি।