রাউধার মৃত্যু তদন্তে মালদ্বীপের পুলিশ রাজশাহীতে
মালদ্বীপের ‘নীল নয়না’-খ্যাত মডেল ও ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রাউধা আতিফের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে রাজশাহী এসেছেন সে দেশের পুলিশের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
দুই কর্মকর্তা হলেন মালদ্বীপ পুলিশের সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজ ও পরিদর্শক আহমদ আলী। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে বিমানে করে রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তাঁরা।
মালদ্বীপ পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা রাজশাহী সার্কিট হাউসে উঠেছেন। তাঁরা রাউধার অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, মালদ্বীপের পুলিশের এই প্রতিনিধিদলটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা পুলিশ সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসেননি। দেশে এসেই সরাসরি মহানগর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরা। যেহেতু রাউধার ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনা ও মামলা এখানে, কাজেই তাঁরা আলাদা করে তদন্ত করতে পারেন না। তবে মামলা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারেন তাঁরা।
জানা গেছে, মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে তাঁদের স্বাগত জানান নগরীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হক।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকেই রাজশাহীতে অবস্থান করছেন রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ, মা আমিনাথ মুহারমিমাথ ও দুই ভাই।
এ বিষয়ে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের সচিব আবদুল আজিজ রিয়াদ বলেন, ‘মালদ্বীপের গণমাধ্যমে রাউধা আতিফের আত্মহত্যার ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করা হয়েছে বলে শুনেছি। সে কারণে হয়তো তাদের পুলিশের একটি দল এসেছে। তবে এখনো তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’
রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পূর্ব) আমির জাফর জানান, রাউধার আত্মহত্যার মামলাটি গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছে। এরপরও হয়তো তাঁর পরিবারের অনুরোধে সে দেশের পুলিশ কর্মকর্তারা এসেছেন। কিন্তু তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় তদন্তকাজ করবেন, সে ব্যাপারে এখনো কিছুই জানাননি।’
গত ২৯ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রাউধা আতিফের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর ৩১ মার্চ তাঁর পরিবারের সম্মতিতে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর হেতেম খাঁ গোরস্তানে দাফন করা হয় তাঁর লাশ।
এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে উঠেছিলেন রাউধা। ২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ‘ভোগ ইন্ডিয়া’ সাময়িকী নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
‘বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য উদযাপন’ (সেলিব্রেটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ‘নীল নয়না’ এই মডেল। উঠতি মডেল হিসেবে রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিও।