অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১১৩টি
অমর একুশে গ্রন্থমেলার চতুর্থ দিনে আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) নতুন বই এসেছে ১১৩টি। মেলায় আজ ছিল শিশুপ্রহর। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত চলে শিশুপ্রহর।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে শুরু হয় ‘স্মরণ : ড. আকবর আলি খান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমিনুল ইসলাম ভুইয়া। আলোচনায় অংশ নেন ফারুক মঈনউদ্দীন, মো. মোফাকখারুল ইকবাল এবং কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ সাদিক।
প্রাবন্ধিক বলেন, ড. আকবর আলি খান প্রশাসনের বহু পদে সাফল্যের সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। মুজিবনগর সরকারে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন; পাকিস্তান সরকার তাঁর বিরুদ্ধে জেলদণ্ডও ঘোষণা করেছিল। বহুকাল তিনি অর্থসচিব হিসেবে কাজ করেছেন, সরকারি প্রশাসনের শীর্ষপদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন, বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন। সরকারি প্রশাসনিক কর্মে এসব সাফল্য সত্ত্বেও মনে করা যায় যে, আকবর আলি খানের মূল পরিচয় তাঁর পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখাজোখায় ছড়িয়ে আছে। পণ্ডিত হিসেবে তিনি অত্যন্ত উচ্চমানের সৃষ্টি রেখে গেছেন।
আলোচকরা বলেন, ড. আকবর আলি খানের কাজের পরিধি ছিল বিস্তৃত। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে থেকেও সৎ ও নির্ভীক আকবর আলি খান কঠোর ভাষায় অন্যায়, অদক্ষতা ও দুর্নীতির সমালোচনা করেছেন। এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা ভাবতেন তিনি। সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি তাঁর মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়েছেন। অর্থনীতি ও ইতিহাস ছাড়াও নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য-সমালোচনা ক্ষেত্রেও তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বহুবিচিত্র বিষয়ে তাঁর আগ্রহ তাঁকে একজন বহুমাত্রিক পণ্ডিতের পর্যায়ে উন্নীত করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘অর্থনীতি, ইতিহাস নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য নিয়ে গভীর জ্ঞানতাত্ত্বিক আলোচনা ড. আকবর আলি খানকে যেমন অমর করেছে তেমনি বাঙালি জাতিকে করেছে ঋদ্ধ। এমন একজন বিবেকবান, স্পষ্টভাষী, সৎ ও নির্মোহ মানুষ আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন।’
আজ ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন ফারুক হোসেন, আবদুল বাছির, ইসহাক খান ও আফরোজা সোমা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি অসীম সাহা, অঞ্জনা সাহা ও ফরিদ কবির। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম, অলোক কুমার বসু ও মিজানুর রহমান সজল। এছাড়া ছিল গোলাম কুদ্দুছ-এর নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী দিল আফরোজ রেবা, চন্দনা মজুমদার, আব্দুল লতিফ শাহ এবং শাহ আলম দেওয়ান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন তুলসী সাহা (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), রতন কুমার রায় (দোতারা) ও মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি)।