ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার জের ধরে জনপ্রিয় অভিনেতা আমির খানের মন্তব্য ‘আতঙ্ক সৃষ্টিকারী’ ও অন্যায্য বলে পাল্টা মন্তব্য করেছে ভারত সরকার।

সংখ্যালঘুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি বলেন, ‘আমরা আমির খানকে দেশ ছেড়ে যেতে দেব না, তিনি নিরাপদে আছেন। ভারতে যাঁরা তাঁকে সম্মান দিয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ ধরনের মন্তব্য তাঁদের জন্য অপমানজনক।’

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, গত বছর বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সাম্প্রতিক ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। তিনি বলেন, ‘আমির খানের এ ধরনের স্থূল মন্তব্য সঠিক নয়।’

গতকাল সোমবার ভারতের ‘গোয়েংকা এক্সিলেন্স ইন জার্নালিজম’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আমির বলেন, ‘বাড়িতে আমি যখন কিরণের (স্ত্রী কিরণ রাও) সঙ্গে কথা বলি, সে বলে—আমরা কি ভারত ছেড়ে চলে যাবো? আতঙ্ক ছাড়াও নৈরাশ্য বা মন-মরা অনুভূতি বাড়ছে। একটা ভয়াবহ ও অনেক বড় কথা কিরণ বলেছে। সে তার সন্তানের জন্য ভয় পায়। আমাদের আশপাশের পরিবেশ কী রকম হবে, এটা ভেবে সে ভয় পায়। দৈনিক সংবাদপত্র খুলতেই সে ভয় পায়। এ থেকে বোঝা যায়, উত্তেজনা অবস্থা বিরাজ করছে।’

আমির খান বলেন, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর একটি অবস্থান নেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তাহীনতার বোধ বেড়ে চললেও রাজনীতিকদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দেখিনি।’

ভারতে যুক্তিবাদীদের ওপর হামলা, গো-মাংস খাওয়ার গুজবে পিটিয়ে হত্যা, ক্ষমতাসীন বিজেপির বিতর্কিত মন্তব্য, লেখকদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ফেরত দেওয়া ইত্যাদি ঘটনা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি ব্রিটেন সফর গিয়ে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন। তিনি বলেন, ‘ভারত প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। অসহিষ্ণু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আমির খানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রবীণ অভিনেতা অনুপম খের বলেন, ‘প্রিয় আমির খান, তুমি কিরণকে জিজ্ঞেস করেছ সে কোন দেশে যেতে যায়? তুমি তাঁকে বলেছ যে এ দেশই তোমাকে আমির খান বানিয়েছে?’