শ্রীলঙ্কায় আরো হামলার শঙ্কা, মসজিদ-গির্জা এড়ানোর পরামর্শ
শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলার পর আবারও হামলা হতে পারে—এমন আশঙ্কায় দেশবাসীকে মসজিদ ও গির্জাগুলো এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার। আজ শুক্রবার রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
আজ জুমার দিন মসজিদ বা গির্জায় গাড়িবোমা হামলা হতে পারে বলে সতর্কতা জানায় রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ফলে মসজিদে না গিয়ে বাড়িতেই নামাজ আদায় করার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শ্রীলঙ্কার মুসলিম সংগঠন জামিয়াতুল উলামার পক্ষ থেকেও মুসল্লিদের বাড়িতেই জুমার নামাজ আদায়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নামাজকালীন সম্ভাব্য যেকোনো হামলার হাত থেকে নিজের পরিবার ও সম্পদ বাঁচাবার তাগিদেই বাড়িতে নামাজ পড়া ভালো বলে জানায় সংস্থাটি।
অন্যদিকে খ্রিস্টান পুরোহিত ম্যালকম রণজিতও পরবর্তী বিজ্ঞপ্তির আগ পর্যন্ত গির্জাগুলোতে গণজমায়েত না করার জন্য যাজকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন।
গত রোববারের হামলার ফলে এরই মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও সহিংসতায় শ্রীলঙ্কায় অনেক মুসলমান নিজদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে।
হামলা প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা বলেছেন, গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলা চালানোর দায় স্বীকার করা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে, এমন সন্দেহে পুলিশ ১৪০ জনকে খুঁজছে।
অপরাধ অনুসন্ধান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে যোগসূত্র থাকতে পারে সন্দেহে সিরিয়া ও মিসরের নাগরিকসহ পুলিশ এখন পর্যন্ত ৭৬ জনকে আটক করেছে।
এদিকে, শ্রীলঙ্কা সরকার ছাড়া আবারও হামলার আশঙ্কায় শ্রীলঙ্কার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও এ সপ্তাহান্তে নিজ দেশের নাগরিকদের প্রার্থনালয়গুলো এড়িয়ে চলতে সতর্কতা জানিয়েছে।
গত রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় গির্জা ও হোটেলে সব মিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণ ঘটে। ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা গির্জায় থাকা অবস্থায় বিস্ফোরণগুলো ঘটে। এতে ২৫৩ জন নিহত ও প্রায় ৫০০ জন আহত হন।
ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা এ ঘটনার মূল হোতাসহ সাতজনের ছবিও প্রকাশ করে।