সারা জীবনের সঞ্চয় ৪০ লাখ রুপি দান!
দানবীরদের নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে আসে হাতেমতাই, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন, স্যার সলিমুল্লাহ কিংবা নবাব হাবিবুল্লাহর মতো লোকজনের কথা। তাঁদের দানে উপকৃত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। তৈরি হয়েছে নজির। যান্ত্রিক এই যুগে প্রয়াত এই দানবীরদের গল্প শুনে মানুষ যখন অতীতকে হাতড়ায়, ঠিক সেই সময়ে দানে জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে হাজির ফুলবতী। ভারতের মধ্যপ্রদেশের কাটনি শহরের ৭০ বছর বয়সী এই নারী সারা জীবনের সঞ্চয় ৪০ লাখ রুপি দান করে দিয়েছেন গোশালা (গরুর বসবাসের স্থান) তৈরি ও দাতব্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নির্মাণে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশে স্বামী ও মেয়ের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯৮২ সালে ফুলবতী উত্তরপ্রদেশের মথুরায় যান। সেখানকার বাংকে বিহারি মন্দিরের দুই নম্বর ফটকের সামনে আগত দর্শনার্থীদের জুতা দেখাশোনা করেছেন তিনি। সেখানে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে এক দশক ধরে অর্থ সঞ্চয় করছেন বিধবা এই নারী। সঞ্চিত অর্থ ও জমি বিক্রির কিছু অর্থ মিলে মোট ৪০ লাখ রুপি জমান তিনি। সেই অর্থ দিয়ে তিনি বৃন্দাবনে একটি গোশালা ও একটি ধর্মশালা নির্মাণ করতে চান।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সম্মানে এই ধর্মশালা নির্মাণের ইচ্ছে ফুলবতীর। বর্তমানে তিনি উত্তরপ্রদেশের বারসানা শহরে গরুর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবতী বলেন, ‘ভগবান কৃষ্ণকে খুশি করার উত্তম উপায় হলো গরুর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা। সে কারণেই আমি এটা নির্মাণ করতে চাই।’
পরিবার সম্পর্ক কথা বলতে অনিচ্ছুক ফুলবতী বলেন, ‘আমার সম্পর্ক শুধুমাত্র ভগবান কৃষ্ণের সঙ্গে। তিনি ছাড়া আমার কেউ নেই। তাই আমার যা কিছু ছিল, সব ভগবানের সেবায় উৎসর্গ করেছি।’
ফুলবতী জানান, তাঁর এক ছেলে কাটনি শহরে বসবাস করেন। মাঝে মাঝে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু ছেলের সঙ্গে স্থায়ীভাবে থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই তাঁর।